কলকাতা: রামনবমীতে বাহিনী ছিল না তাই অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল রাজ্যে। কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) ছিল বলে নির্বিঘ্নে কাটল হনুমানজয়ন্তী। শুক্রবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মন্তব্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের (BJP All India Vice President and MP Dilip Ghosh)। রামনবমীতে (Ram Navami) অশান্তির পর, হনুমান জয়ন্তীতে (Hanuman Jayanti) আগেভাগে সতর্ক থাকতে রাস্তায় নামানো হয়েছিল আধা সেনা। রাজ্যে হনুমানজয়ন্তীতে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি রাজ্যে। রামনবমীতে বাহিনী নেই, অশান্তি। হনুমান জয়ন্তীতে বাহিনী ছিল, শান্তি বহাল।
শুক্রবার প্রতঃভ্রমণে বেরিয়ে চেনা ছন্দে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানালেন দিলীপ ঘোষ। এই সরকার শান্তি চায় না। কারণ এতেই তাদের রাজনৈতিক লাভ। যারা দুর্বৃত্ত, তারা এমন দাপিয়ে বেড়ায়। সব ক্ষেত্রেই রং, ধর্ম দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা চলছে। রামনবমীর মিছিল ঘিরে রাজ্যের বেশকিছু জায়গায় অশান্তি ছড়িয়ে ছিল। রামনবমীতে বাহিনী ছিল না তাই অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল রাজ্যে। হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ ছিল রামনবমীর ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে রাজ্য। হনুমান জয়ন্তীতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। রাম নবমীর মিছিল থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্য সরকার কড়া পুলিশি নজরদারি চালিয়েছিল হনুমান জয়ন্তীতে। হনুমান জয়ন্তীকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনার খবর মেলেনি। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল বলে নির্বিঘ্নে কেটেছে হনুমানজয়ন্তী। কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) ছাড়া এই রাজ্যে শান্তি বজায় রাখা যাবে না। সেটা আদালত মেনে নিয়েছে। দেখা গেল সেটাই ঠিক। রামনবমীতে পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। গন্ডগোল হতে দিয়েছিল। হনুমান জয়ন্তীতে সেন্ট্রাল ফোর্স আসতেই সব ঠান্ডা। নির্বাচন অবশ্যই সেন্ট্রাল ফোর্স দিয়েই হওয়া উচিত। এখানকার পুলিশের হাতে ছেড়ে দিলেই সন্ত্রাস হবে।
অতীতেও রাজ্যপালের সঙ্গে খুব একটা সুসম্পর্ক ছিল না রাজ্যের। সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছিল ধনখড়কে। হাওড়া ও রিষড়া কাণ্ডের পর রাজ্যপাল অশান্তি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। রাজ্য রাজনীতিতে বহু দিন আগেই দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)। তিনি বলেছিলেন, যে কোনও মূল্যে এই দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। রাজ্যপালের এমন মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলের দাবি, স্বাভাবিক ভাবে নবান্ন-রাজভবনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে পারে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, এরাজ্যে এটা চলে। রাজ্য রাজ্যপাল নিরপেক্ষ ভাবে সংবিধানের পক্ষে কাজ করবেন। নতুন এসেছেন। তাঁর মতো দক্ষ মানুষ খুব কম এসেছেন। সময় লাগবে। উনি ডান দিকে পা রাখলে ওরা চেঁচাচ্ছে। বাঁদিকে পা রাখলে এরা চেঁচাচ্ছে।
আরও পড়ুন:CJI DY Chandrachud | আইনজীবীদের ভার্চুয়াল শুনানির বার্তা প্রধান বিচারপতির
হনুমান জয়ন্তীতে (Hanuman Jayanti) সম্প্রীতির বার্তা দিতে শহরের পথে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Ananda Bose)। পাশাপাশি নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখেছেন। প্রশাসক এরকমই হওয়া উচিত। কান দিয়ে নয়। চোখ দিয়ে দেখা উচিত, বললেন দিলীপ ঘোষ।
শিবপুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (BJP state president Sukanta Majumdar)। বৃহস্পতিবার বাঁশবেড়িয়াতে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাতে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে (MP Locket Chatterjee) আটকায় পুলিশ। এই ভাবে বিজেপিকে আটকানো যাবে না। বিজেপি গণতান্ত্রিক ভাবে মোকাবিলা করবে। এ রাজ্যে সব কিছু কোর্ট নির্ণয় করে। এটা সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়। হিন্দুদের উৎসব হলেই ইচ্ছাকৃতভাবে গন্ডগোল হচ্ছে। কারা করছে? যারা নির্বাচনে গন্ডগোল করে। যারা সিএএ তে রাস্তায় নেমে গন্ডগোল করে। ভোট দিতে বেরোবে না হিন্দুরা। তারাই সব লুটেপুটে খাবে। এটা কোর্ট বন্ধ করেছে।