ভেরিসেলা জস্টার (varicell zoster) ভাইরাসের আক্রমণে এই র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোম(ramsay hunt syndrome) দেখা দেয়। চিকেনপক্সের (chicken pox) জন্যেও দায়ী এই একই ভাইরাস। ইউ এসের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রোটেকশন(US Centre for disease control and protection) অনুযায়ী এই ভেরিসেলা জস্টার হার্পেস ভাইরাস গ্রুপের(herpes virus group) অন্যতম।
কী কারণে হয় এই শারীরিক সমস্যা?
এই ভাইরাস দীর্ঘ সময় ধরে মানব দেহে ঘাপটি মেরে থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলেই নতুন করে হামলা চালায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে স্ট্রেসের কারণেও এই ভাইরাস জেগে ওঠে কারণ অতিকিক্ত স্ট্রেস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে মানব দেহে যে টি সেল(T cell) রয়েছে সেগুলি করোনাভাইরাসের(coronavirus) কারণে অক্ষম হয়ে পড়লে এই ভেরিসেলা জস্টার ভাইরাস সক্রিয়ে হয়ে ওঠে।
কীভাবে শরীরে জাঁকিয়ে বসে এই রোগ? (how this disease progress)
ভেরিসেলা জস্টার ভাইরাস সক্রিয় হয়ে আক্রমণ করলে প্রথমে মুখের মাংশপেশিতে ক্লান্তি(weakness in muscles) অনুভব হয়। এছাড়া চোখ বন্ধ করতে গেলে সাময়িক অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। শরীরের পুরোপুরি জাঁকিয়ে বসতে এই রোগ সময় নেই দু থেকে তিন দিন। তাই এই রোগের লক্ষণ বুঝে দ্রুত চিকিত্সা শুরু করলে রোগীর সেরে ওঠাও দ্রুত হয়। এর ফলে আক্রান্ত স্নায়ুগুলোর বড় সড় কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা এড়ানো যায়।
র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোমের চিকিত্সা পদ্ধতি ঠিক কি (how to treat these symptoms)
র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোমের চিকিত্সা করতে অ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগ, স্টেরয়েড ও ফিজিথেরাপির সাহায্য নিতে হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন মূলত স্টেরয়েড ও অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধগুলিই হল এই রোগ সারিয়ে তোলার প্রধান হাতিয়ার।
তবে ফেসিয়াল এক্সারসাইজও করতে হবে নিয়মিত। চোখের পর্যাপ্ত যত্ন নিতে হবে। কারণ যখন এক চোখ বন্ধ হয় না তখন করনিয়াল অ্যাবারেশন অর্থাৎ করনিয়ার একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে যা সহজে নিরাময় করা যায় না। তাই এই সমস্যায় আক্রান্তদের টিয়ার ড্রপ ও আই প্রোটেকশন ব্যবহার করতে পারেন। তাই বাড়ির বাইরে বেরোলে চশমা পড়ে বেরোতে হবে। আর রাতে ঘুমোনোর সময় যে চোখে সমস্যা তা ঢেকে রাখতে হবে।
র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোম কি ছোঁয়াচে? (ramsay hunt sysdrome is contagious?)
না, এই রোগ ছোঁয়াচে নয় ঠিকই তবে যাদের চিকেনপক্সের ভ্যাকসিন নেওয়া নেই তাদের চিকেনপক্সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে কয়েকগুণ। এছাড়া মুখের র্যাশ, গোটা কিংবা ফোস্কার ছাল শুকিয়ে খসে না যাওয়া পর্যন্ত সেই সব মানুষের থেকে দূরে থাকতে হবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম কিংবা এখনও চিকেনপক্স হয়নি কিংবা চিকেনপক্সের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়নি।
এই র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোম থেকে আদৌ কি সেরে ওঠা সম্ভব? (ramsay hunt syndrome is curable)
এই র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোম সাময়িক। রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে চিৎসা শুরু হওয়ার ১৫ দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে আক্রান্ত ব্যক্তি। এমনকি র্যামসে হান্ট সিন্ড্রোমের সময় যে শ্রবণ শক্তি হারিয়ে যায় কিংবা কানে সমস্যা হয় তার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে কখনও-কখনও খুব সামান্য ফেসিয়াল পালসি থেকে যায়। যেমন চোখ বন্ধ করতে দেরি হওয়া ইত্যাদি।