দেবাশিস দাশগুপ্ত
আগামিকাল মঙ্গলবার বাংলার চার কেন্দ্রে ভোট। মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রে কাল ভোট নেওয়া হবে। ১৩ মে চতুর্থ দফায় ভোট হবে বহরমপুরে। রাজনৈতিক মহলের বিশেষ নজর থাকছে আগামিকাল মুর্শিদাবাদ এবং ১৩ মে বহরমপুর কেন্দ্রের ভোটের দিকে। মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী হলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Muhammad Salim)। বহরমপুরে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। বাংলায় বাম-কংগ্রেসের জোট হওয়ার পিছনে দুই দলের শীর্ষ দুই নেতার অবদান সবচেয়ে বেশি। অতীতের সমস্ত তিক্ততা ভুলে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোট গড়া নিয়ে সেলিম-অধীর জুটির উতসাহের অন্ত ছিল না। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে, তৃতীয় এবং চতর্থ দফার ভোট এই জুটির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। দুই দলই একে অপরকে জেতাতে আদাজল খেয়ে ভোটের ময়দানে নেমেছে। তাই এই দুই দফার ভোটের দিকে, বিশেষত দুই প্রার্থীর দিকে নজর থাকছে রাজনীতির কারবারিদের।
অধীর অনেকদিন আগে থেকেই চেয়েছিলেন, মুর্শিদাবাদে সেলিম ভাই দাঁড়ান। ভোট ঘোষণার আগে থেকেই সেলিম মুর্শিদাবাদে কার্যত ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছিলেন। তখনই বোঝা গিয়েছিল, সেলিম ওই কেন্দ্রে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেলিমের বিপক্ষে তৃণমূলের প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের। বিজেপি প্রার্থী গৌতম ঘোষ। অর্থাত ত্রিমুখী লড়াই। বহরমপুরের পাঁচবারের কংগ্রেস সাংসদ অধীরকে এবার হারাতে মরিয়া তৃণমূল। এখানেও ত্রিমুখী লড়াই। আসরে আছেন তৃণমূলের ইউসুফ পাঠান, বিজেপির নির্মল সাহা। অধীরের মতো বিজেপি প্রার্থী বহরমপুরের ভূমিপুত্র। জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন সদস্য পাঠান অবশ্য গুজরাতের লোক। যে তৃণমূল বিজেপিকে বহিরাগতদের দল বলে দিনরাত গালিগালাজ করে, তারা কী করে বাংলা না জানা পাঠানকে গুজরাত থেকে বহরমপুরে এনে দাঁড় করাল, প্রশ্ন বিরোধীদের।
আরও পড়ুন: শাহের মুখে সন্দেশখালি আছে, নেই ভিডিও নিয়ে কোনও কথা
সেলিম এবং অধীর দুজনেই কট্টর বিজেপি আর তৃণমূল বিরোধী। দুজনেই বিজেপি, তৃণমূলকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দুই কেন্দ্রেই সিপিএম তথা বামেরা এবং কংগ্রেস এবার একে অপরের জন্য জান লড়িয়ে দিচ্ছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। অধীর ঘোষণা করেছেন, কংগ্রেস কর্মীরা সেলিমভাইকে জেতাতে জান বাজি রেখেছেন। সেলিমও বলেছেন, বহরমপুরে অধীরের জন্য সিপিএম সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছে। জেলার এই দুই কেন্দ্রই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেলিম মুর্শিদাবাদে দাঁড়ানোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উড়ে আসা বাজপাখি বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতেই সেলিম প্রার্থী হয়েছেন। সেলিম বলেন, বাজপাখি তো শিকারি। আমি বিজেপি আর তৃণমূল নামে দুই শিকারকে ধরতে এসেছি। তাঁর দাবি, এই ভোটের ফলের পর এটা বলা বন্ধ হবে যে, সিপিএম শূন্য। এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস শূন্য। লোকসভায় বাংলা থেকে বামেরা শূন্য। কংগ্রেস দুই। সেখানে লোকসভা ভোট সেলিম-অধীর জুটির কাছে বিশাল চ্যালেঞ্জ।
অন্য খবর দেখুন