নয়াদিল্লি ও ভোপাল: হিমাচল ও কর্নাটক বিজয়ের পর কংগ্রেসের জোশ শতগুণে বেড়ে গিয়েছে। আগামী নভেম্বরে শিব-রাজ্য মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ১৫০ আসন পাবে বলে দাবি করলেন রাহুল গান্ধী। সোমবার মধ্যপ্রদেশের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাহুল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। আমাদের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় ছিল কর্নাটকে ১৩৬টি আসনে জিতেছি। মধ্যপ্রদেশে সেটা ১৫০ হবে। কর্নাটকে আমরা যা করেছি, মধ্যপ্রদেশেও একই ছকে ভোটে লড়ব। রাহুলের এই দাবির জবাবে বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, উনকো খেয়ালি পোলাও পাকানে হ্যায় তো পাকাতে রহে। অর্থাৎ উনি যদি দিবাস্বপ্ন দেখতে চান তো দেখতে থাকুন।
রাহুল ছাড়াও এদিন কংগ্রেস নেতৃত্বের বৈঠকে ছিলেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা পি আগরওয়াল ছাড়াও প্রদেশ নেতৃত্বের প্রায় সব নেতা হাজির থেকে ঐক্যবদ্ধ থাকার ইঙ্গিত দেন। বৈঠকের বিস্তারিত বর্ণনা করতে গিয়ে আগরওয়াল বলেন, সকলেই জেতার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এবং এই কাজে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।
কমল নাথ বলেন, আমরা ভোটযুদ্ধের কৌশল এবং কোন ইস্যুতে দল লড়াই করবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করব, সে ব্যাপারে সকলে সহমত হয়েছেন। ভোটের মাত্র চার মাস আগের এই আলোচনায় তাবড় নেতারা এক টেবিলে বসেছেন এটাই তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু তাতে কি প্রমাণ হয় কর্নাটকের মতো জয় আসবে? এই প্রশ্নের জবাবে কমল নাথের জবাব, নারী সম্মান যোজনার মধ্য দিয়েই তার সূচনা হয়ে গিয়েছে। কিছু কাজ আমরা করে ফেলেছি। আর কিছু কাজ করা বাকি আছে। একবারে সব গুলি চালিয়ে দেব তা হতে পারে না।
রাহুলকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ বলেন, বিজেপি মধ্যপ্রদেশে ২০০-র বেশি আসনে জিতবে। ওনার স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগলে দেখতে দিন। প্রসঙ্গত, ২৩০ আসন বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নেতৃত্বে কংগ্রেসে ভাঙনের পর বিজেপি এখানে সরকার গঠন করে। ২০১৮ সালে কংগ্রেস এই রাজ্যে ১১৪টি আসনে জিতেছিল। নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা থেকে মাত্র ২টি কম। বিজেপি জিতেছিল ১০৯টি আসন। নির্দল ৪টিতে, বহুজন সমাজ পার্টি ২ এবং সমাজবাদী পার্টি পেয়েছিল একটি আসন।
উল্লেখ্য, এদিনই রাজস্থানের দুই বিবদমান কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের সঙ্গেও মীমাংসা বৈঠক রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। তারপরই এদিন সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধী আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। প্রথমে সানফ্রান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউ ইয়র্কে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। এরমধ্যে সানফ্রান্সিসকোতে স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতা করবেন রাহুল। ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মার্কিন আইনসভার সদস্য এবং চিন্তাবিদদের সঙ্গে মিলিত হবেন। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গেও তাঁর একটি অনুষ্ঠান রয়েছে। ৪ জুন নিউ ইয়র্কে একটি বিরাট জমায়েত যোগ দিয়ে দেশে ফেরার কথা রাহুলের।