হৃপস্পন্দন ও মস্তিষ্কের পরিচালন ক্রিয়ার মতই কোভিডকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে সুস্থ রাখা। পরিবেশ দূষণ, খাবারে ভেজাল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এর ফলে কয়েক বছর আগে চল্লিশের কোঠায় পৌঁছে যে ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হত মানুষ, এখন খুব অল্প বয়েসেই শরীরে বাসা বাঁধছে সেই সব রোগ ও ব্যাধি। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখেত আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এই দিকগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সুষম আহার
আমাদের খাদ্যতালিকা ও খাদ্যাভ্যাসের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীর সুস্থ রাখতে তাই খুব জরুরি সুষম আহার। যে-খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও জল থাকে তবে সেটা সুষম আহার হয়। ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন-ভিন্ন হয় খাদ্যতালিকা। তবে সেক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের অনুপাত থাকতে হবে ১:১:৪। এই অনুপাত ঠিক থাকলে বা মেনে চললে তবেই সার্বিক বিকাশ সম্ভব। ভাল হয় এই বিষয়ে যদি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যায়।
অ্যাক্টিভ লাইফস্টাইল
সুস্থ থাকতে প্রয়োজন শরীরের স্ফূর্তি। তাই এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ না-বসে সারাদিন অল্প হলেও হাঁটাচলার প্রয়োজন।পায়ের সমস্যা না থাকলে লিফটের বদলে ব্যবহার করতে পারেন সিঁড়ি। আপনার বাড়ি বা অফিস বহুতলে হলে প্রথম দুটি বা শেষ দুটি তলা হেঁটে উঠতে পারেন। সমস্যা থাকলে বাকিটার ক্ষেত্রে লিফ্ট ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে রক্তের চলাচল ভাল হবে এবং শরীরে দম বাড়বে।
নিয়মিত যোগ ব্যায়াম আব্যশক
প্রতিদিন কোনও ব্যায়াম বা যোগা করুন। এক্ষেত্রে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। তাহলে আপনার বর্তমান শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী তিনি আপনাকে বিশেষ কিছু যোগা বা ব্যয়াম বলে দেবেন। এর ফলে শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে । অনেক ক্ষেত্রেই স্ট্রেস ও টেনশন থেকে শরীরে ওজন বৃদ্ধি হয়। নিয়ম মেনে যোগ ব্যায়াম করলে শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াগুলির পরিচালনা ক্ষমতা বেড়ে যায়। এর ফলে কোনও জীবাণু আক্রমণ সফল ভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
শরীরে বাড়তি ক্যালরি তৈরি করে তেল বা চর্বিযুক্ত খাবারগুলি। আমাদের শরীরে প্রয়োজনের বেশি ক্যালরি তৈরি হলে সেগুলো শরীরে জমতে শুরু করে। এর ফলে স্থূলতা বৃদ্ধি পায়। তাই এই ধরনের খাবার যত কম খাওয়া যায় তত সুস্থ থাকে শরীর। শরীরে অতিরিক্ত মেদ হলে বা চর্বি জমলে বৃদ্ধি পায় ওবেসিটি বা রক্তচাপের মত শারীরিক সমস্যা।
নিয়ম মেনে তিন বেলার খাবার খান
শরীর সুস্থ রাখতে সুষম আহারের প্রয়োজন। তবে সেই আহার তখনই সম্পূর্ণ ভাবে কাজে লাগবে যখন আমরা নিয়ম মেনে সময়মতো এই খাবারগুলি খাব। ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই মিল স্কিপ করেন। এটা করা ঠিক নয়। এক বেলা না-খেয়ে পরে এক সঙ্গে অনেক খানি খাবার খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এতে ওজন কমার বদলে আর ও বেড়ে যায়। এবং পরবর্তী সময় আপনার খাবার খাওয়ার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
ধূমপান, মদ ও অন্যান্য মাদক দ্রব্য থেকে দূরে থাকুন
সবসময় মনে রাখবেন এগুলির আসক্তির ফলে দ্রুত ওজন বাড়ে। মদ খুব সহজেই ফ্যাট হিসেবে শরীরে জমতে থাকে এর ফলে স্থূলতা বাড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে অন্যান্য সমস্যাও।
এগুলি মেনে চলুন, ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।