দিনে দিনে যত বাড়ছে ডায়াবেটিসে(Diabetes) আক্রান্তদের সংখ্যা ঠিক তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই রোগ নিয়ে নানা রকমের ভ্রান্ত ধারণা(diabetic myths)। বর্তমানে, পরিস্থিতি এমন যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল তা বোঝা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই যেমন অনেকেই বলে বেশি চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস হয়। এদিকে কেও একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে তখন আবার তাকে সুগার ফ্রি ডায়বেটিক খাবার (Sugar free diabetic food)খেতে মানা করা হয়। ডায়াবেটিস নিয়ে এই ধরনের নানা মুনির নানা ভ্রান্ত ধারণার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন-
স্টার্চ(starch) যুক্ত খাবার বা কার্বোহাইড্রেট(carbohydrate) আছে এমন খাবার যেমন ভাত, আটা, পাউরুটি ও শস্য আমাদের নিত্যদিনের খাদ্যতালিকার(diet) অংশ। এই সব খাদ্য সামগ্রী(food items) থেকেই আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় শক্তি(energy) পায় যা কোনও মতেই বাদ পড়লে চলবে না। তবে এটা ঠিক এই স্টার্চ থেকেই রক্তে শর্করা(glucose) তৈরি হয় তাই চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে ডায়বেটিক(diabetic) ব্যক্তির জন্য কতটা পরিমান এই কার্বোহাইড্রেট ঠিক।
ডায়াবিটিসের দুটি প্রকার হয়, এদের মধ্যে একটি টাইপ টু ডায়াবেটিস যেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও কঠিন রূপ নেয়। অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত ডায়াবেটিসের শুরু তে প্যানক্রিয়াস শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি করে। কিন্তু এই সময় ডায়াবেটিসের রোগীরা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস না বদলান তা হলে বড় বিপদ হতে পারে। একটা সময় পর প্যানক্রিয়াস ইনসুলিন তৈরির কাজ একেবারে বন্ধ করে দেয়। সেই সময় পুরোপুরি ওষুধ ও ইনসুলিন ইঞ্জেকশনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়। তাই সময়ে সময়ে চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বলে তার পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে।
ডায়েবেটিকরা মদ্যপান করতেই পারেন তবে এক্ষেত্রে পরিমানে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। পাশাপাশি রোজ মদ্যপান করা চলবে না তবে মাঝে মধ্যে করতে পারেন।
ডায়বেটিকরা যে সব সময় রোগপ্রবণ হবেন তেমনটা নয়। তবে এটা ঠিক যদি রক্তে শর্করার মাত্রা যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে উপর নীচে হয়ে যায় সেক্ষেত্রে অসুস্থতা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষের শারীরিক অবস্থা ও সংক্রমণের তীব্রতার ওপর গোটা বিষয়টি নির্ভরশীল।
ডায়াবেটিস এমন একটা রোগ যা একবার হলে তা পুরোপুরি সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। তবে চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে আবার বেশ কিছু প্রাকৃতিক সামগ্রী কিংবা সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যা কিছুটা কমলেও পুরোপুরি সেরে যাওয়া সম্ভব না। অনেক ক্ষেত্রে আবার এই সব টোটকা ডায়বেটিসের নিত্যদিনের ওষুধের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এর ফলে ওষুধের প্রভাব কমিয়ে ডায়াবেটিসের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তাই নতুন কোনও ওষুধ বা কোনও ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগানোর আগে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন। তাকে লুকিয়ে কোনও কিছু করলে বিপদ বাড়তে পারে।
(ছবি সৌ: Unsplash)