কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: আফগানিস্থানে চলমান পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে এবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত। হিংসার মাধ্যমে আফগানিস্তানে কেউ ক্ষমতায় এলে সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না ভারত। সম্প্রতি কাতারের দোহায় আয়োজিত একটি বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
গত ১২ ই অগাস্ট দোহায় আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় ভারত ছাড়াও ছিল জার্মানি, নরওয়ে, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, তুর্কেমেনিস্তানের মত দেশগুলি। সেই বৈঠকে ভারতের এই অবস্থানকে সমর্থন জানায় বাকি দেশগুলিও। এই বৈঠকের দুদিন আগে অর্থাৎ ১০ অগাস্ট আফগান পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আরো একটি বৈঠক করে আমেরিকা চীন উজবেকিস্তান পাকিস্তান ব্রিটেনের রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। দুই দফার সেই বৈঠকেই আফগান সরকার ও তালেবানকে পারস্পারিক বিশ্বাস ও আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থায় পৌঁছানোর জন্য আবেদন জানানো হয়। সেই বৈঠকেই স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, সামরিক বাহিনী দিয়ে আফগানিস্থানে ক্ষমতা দখল করলে সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় অংশগ্রহণকারী সমস্ত রাষ্ট্রগুলি। যদিও সূত্রের খবর আফগানিস্থানে তালিবান ক্ষমতা দখল করলে চীন সর্বপ্রথম তাকে স্বীকৃতি দিতে পারে। এমনটাই জানা গিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।
আরও পড়ুন: আর মাত্র ৫০ কিলোমিটার, কাবুলের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে তালিবান
বৈঠকে আফগানিস্তানের সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতসহ অন্যান্য দেশগুলি। তালেবান ও আফগান সরকারের লড়াইয়ে সে দেশের সাধারন নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই উঠে আসছে খবরের শিরোনামে। এছাড়াও নারী নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘণের মত বিষয়গুলি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত।
ভারতের এই মন্তব্য তখনই এল যখন রাজধানী কাবুল থেকে আর মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে তালিবান। গতকাল শুক্রবার বিনা লড়াইয়ে আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশে তখন করে তালিবান। তার আগে ঘোর প্রদেশের পতন ঘটে। ঘর এবং লোগার প্রদেশে দুটি আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এখান থেকে একটি সংযোগকারী হাইওয়ে চলে গিয়েছেন কাবুলে। সেই হাইওয়েতে ইতিমধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে তালিবান জঙ্গিরা। এবার কাবুলই হবে পরবর্তী গন্তব্য। সেই লক্ষ্যেই রণকৌশল সাজাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: হিংসা রুখতে তালিবানকে ‘ক্ষমতা বন্টনের প্রস্তাব’ আফগান সরকারের
এমন প্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের আসন্ন ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। তালিবানের আগ্রাসনের গতিপ্রকৃতি চিন্তা বাড়াচ্ছে ভারতসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলির। তালিবান ক্ষমতায় আসুক তা চায়না ভারতসহ বেশকিছু প্রতিবেশী রাষ্ট্রই। সে দলে রয়েছে পশ্চিমী দেশগুলিও। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এবার ভারতের এমন মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।