ঘুমের অভাবে শুধু যে ক্লান্তি ভাব আসে শরীরে তা নয় বরং প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও এর প্রভাব পড়ে। ব্যহত হয় একাগ্রতা, নানা রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়, যুক্তি ও বিবেচনা সব কিছুকেই প্রভাবিত করতে পারে ঘুমের অভাব। ত্বকের ওপরও ছাপ ফেলে ঘুমের ঘাটতি। যার সব থেকে বড় ঊদাহরণ ডার্ক সার্কেল। এছাড়াও আরও কত সমস্যা। আধুনিক জীবনযাপনের ব্যস্ততায় অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তবে তাই বলে এটা যদি নিত্যদিনের অভ্যেসে পরিণত হয় তা হলে শরীরের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আপনারও যদি অনিয়ম ঘুম কিংবা দীর্ঘদিনের ঘুমের ঘাটত তৈরি হয়েছে তা হলে এই অভ্যেস বদলের চেষ্টা করুন। এর জন্য এই কাজগুলি করতে পারেন-
রাতে ভাল ঘুম নিশ্চিত করতে হবে
কাজের যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন চেষ্টা করুন দিনে অন্তত ৭ ঘন্টা ঘুমোনোর। তবে শুধু ঘন্টা ধরে ঘুমোনোই যথেষ্ট নয়। বরং একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমোলে ও ঘুম থেকে উঠলে সুবিধে হবে। ছুটির দিনেও যেন এর এর ব্যতিক্রম না হয় সেই চেষ্টা করুন। এই অভ্যেসে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক ঠিক থাকবে।
দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ
দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনিদ্রা বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই কোনও কারণে যদি মেজাজ হারান বা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তখন দুশ্চিন্তা করে সারারাতা জেগে না কাটিয়ে সব কিছু ডায়েরিতে লিখে রাখুন। এই অভ্যেস আপনার আবেগপ্রবণ মুহূর্তগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ কমবে। এর পাশাপাশি একটা স্লিপ ডায়রিও মেন্টেন করুন ঘুমোনোর সময় কোন বিষয়গুলি বারবার আপনাকে বিরক্ত করে সেইগুলো নিয়ে মনোবিদের সঙ্গে প্রয়োজনে আলোচনা করতে পারেন।
ইলেকট্রনিক ডিভাইস দূরে রাখুন
ঘুমোতে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা অন্যান্য ইলেট্রনিক ডিভাইস থেকে যে নীল রশ্মি নির্গত হয় তা মেলাটোনিন নামক হরমোনের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। এক্ষেত্রে মস্তিষ্ক রাতকে দিন বলে ভ্রম করে ফলে ঘুমে আসতে দেরি হয়।
ভাল অভ্যেস তৈরি করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে জামাকাপড় বদল করা, দাঁত ব্রাশ করা, চুল আচড়ানো ইত্যাদি। এই সব কাজ নিয়মিত করলে মস্তিষ্কের কাছেও একটি সঙ্কেত পৌঁছয় যে ঘুমোনোর সময় হয়ে গেছে।
বিছানায় বসে কাজ করবেন না
এছাড়া বিছানায় বসে কাজ করা বা খাবার খাওয়ার অভ্যেস থাকলে তা বদলে ফেলুন। বিছানায় ৩০ মিনিট শুয়ে থাকার পরও যদি ঘুম না আসে তা হলে হালকা গান শুনুন। মেডিটেশন করতে পারেন। বিছানায় শুয়ে ফোন দেখা, ইমেল চেক করা কিংবা দীর্ঘক্ষণ সোশাল মিডিয়ায় সময় না কাটানোই ভাল। বিছানা যে শুধু ঘুমোনোর জন্য, এই বিষয়ে মস্তিষ্ক ও শরীরকে অভ্যস্ত করে তুলুন।