Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ : ধর্ম যার যার উৎসব সবার
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৩০:২৩ পিএম
  • / ৩৮৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

বিজয়ার প্রণাম, শুভেচ্ছা ,ভালোবাসা তাদের জন্য যাঁরা দুর্গাপুজোয় বিশ্বাস করেন। অন্য বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসীদের জন্য শারদ শুভেচ্ছা, উৎসব চলে গ্যালো, আরএক উৎসবের জন্য অপেক্ষা, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, বাঙালি শারদ উৎসবে মাতে, ইদে সেমাই খেতে যায় বন্ধুদের বাড়িতে, ক্রিসমাসে নাহুমসের কেক আনে বাড়িতে, নবান্ন হয় সবার ঘরে, পাকা ধানের উৎসব। টুসু পুজোয় টুসু ভাদুর গান ধরে, দোল হয়, সবার রংয়ে রং মাখাতে হবে, বলেছেন আমাদের ঠাকুর, বাঙালির ঠাকুর, সন্ধ্যায় শ্যামাসঙ্গীত হয়, রচয়িতা কাজী নজরুল ইসলাম।
পাশ্চাত্যের সেকুলার ধারণার বহু বহু আগে, বাঙালি সমাজ ছিল প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ, এখানে রাজারা মসজিদ বানিয়েছে, নবাবরা মন্দিরে দান দিয়েছে, সেই কবেকার ইতিহাস। বাঙালি সমাজে তাই ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তাই আমি নাস্তিক না আস্তিক সে প্রশ্ন সরিয়ে রেখেই শারদ শুভেচ্ছা জানাই প্রত্যেককে।

সব্বার পাড়ায় উৎসবের শেষ দিনে সিঁদুর খেলা, মিষ্টি মুখ হয়েছে। তাদের মধ্যে আছে শূচিস্মিতা, মধুরিমা, কুন্তলা, বৃন্তা, সুমন সিং, ঋতু প্রকাশ, মাহমুদা সুলতানা। হ্যাঁ আবাসনের দুর্গাপুজোতে তারা সকলে মিলে অঞ্জলি দিয়েছে, পুজোর ভোগ খেয়েছে, প্রসাদ খেয়েছে, আবার বিসর্জনের দিনে সিঁদুর খেলায় মেতেছে। সেই আবাসনের এক অন্তত নামে হিন্দু পরিবার পুজোতে অংশ নেয়নি, তারা নাস্তিক, কেবল খাওয়া দাওয়া করেছে। মানে যে যার মতো করে এই দুর্গাপুজো, শারদ উৎসব পালন করেছে, উপভোগ করেছে।

আরও পড়ুন : চতুর্থ স্তম্ভ : মুসলিম জনসংখ্যা হু হু করে বাড়ছে

মাহমুদা সুলতানা কম্পিউটার সায়েন্সে ডক্টরেট, কলেজে পড়ায়, নামাজও পড়ে, অষ্টমীর অঞ্জলিও দেয়। কোন জন মাহমুদা সুলতানা? মাফ করবেন আলাদা করে দেখাতে পারবো না, কারণ আমাদের রাজ্যের ইসলামের ঠেকা নেওয়া এক উন্মাদ ফতোয়া দিয়েছে, যে হাজী সাহেব পুজো উদ্বোধন করেছেন, তার কল্লা কেটে নেওয়া হবে, ধড় থেকে মাথা নামিয়ে দেওয়া হবে। কারণ, এ কাজ ইসলাম বিরোধী, তাঁর মতে ধর্ম যার যার, উৎসবও তার তার। মেলানো চলবে না।
সেই উন্মাদের নাম আব্বাস সিদ্দিকি, কমরেড সেলিম সাহেবের বন্ধু, সিপিএমের নির্বাচনী শরিক, শতরূপ ঘোষের মতে এক সেকুলার নেতা।
সেকুলার কথাটা তার কাছে এক হাস্যকর কথা, সেকুলারদের মাথায় ঝাঁটার বাড়ি মারার নিদান দেন তিনি, অন্য ধর্মের উৎসবে যেন মুসলমানরা অংশগ্রহণ না করে, সেই কথা তিনি প্রকাশ্যে জলসাতে বোঝাচ্ছেন, রাজ্যের সরকার চুপ করে বসে আছে, এই লোকটা যার থাকার কথা থানা হাজতে, জেলে, সে প্রকাশ্যে বিষ ছড়াচ্ছে।

সেই কবে থেকে আমরা শুনে আসছি ধর্ম যার যার উৎসব সবার, ভুল শুনেছি? অধ্যাপক শামিম আহমেদ, দর্শনের অধ্যাপক, এই কদিন আগে গোলপার্ক, রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অফ কালচারে গিয়ে ভাষণ দিলেন ধর্ম নিয়ে, বিষয় ছিল, কী দিবে তোমারে ধর্ম? রামকৃষ্ণ মিশন বেলুড় মঠের সম্পাদক একাভ্রতনন্দ মহারাজ।
ডঃ শামিম আহমেদকে স্বারস্বত সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে ডেকেছেন। বিষয়, স্বাধীনতাই উন্নতির প্রধান শর্ত। সেখানে গিয়ে আমাদের বন্ধু শামিম বলেছেন ব্যক্তি মানুষ, সমষ্টি মানুষের স্বাধীনতা, সামাজিক, ধার্মিক, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাষ্ট্র সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। অন্য দিকে সেই রাজ্যেই বসে এক উন্মাদ প্রকাশ্যে কল্লা কেটে নেবার, মাথা থেকে ধড় নামিয়ে ফেলার ফতোয়া দিচ্ছে।
অবাক লাগে, না বিমান বসু না সুজন চক্রবর্তি, কেউ একটা কথা বলছেন না, তাঁরা নাকি কমিউনিস্ট, তাঁরা নাকি বামপন্থী।

আরও পড়ুন : চতুর্থ স্তম্ভ : রাজনৈতিক পর্যটন

বিমান,সুজন বাবুদের কথা বাদ দিন, আদর্শচ্যুত, দিকভ্রষ্ট ওই নেতারা কয়েকবছরের মধ্যেই দলকে যেখানে নিয়ে দাঁড় করালো, তা থেকে বোঝাই যায় যে ওনাদের কান্ডজ্ঞান, বোধবুদ্ধি কবেই লোপ পেয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার? তৃণমূল দল? তাদের কানে এই ফতোয়া যায়নি? কোন আইনে এরকম এক উন্মাদকে ছেড়ে রাখা হয়েছে? জেলে পোরা হয়নি? আসলে এই ভাবেই ফ্রাঙ্কেস্টাইন তৈরি হয়, এইভাবেই তৈরি হয় ভিন্দ্রেলওয়ালারা, এই ভাবেই আশারাম বাপু বা রাম রহিম সিংরা তৈরি হয়। প্রশাসন তাদেরকে ছাড় দেয়, তারা এটাকে আস্কারা ভাবে, তারা তাদের গলার স্বর আরও তোলে, তাদের ভক্তরা ভাবে ভাইজানকে কেউ ছুঁতেও পারবে না, ভাইজান আরও গলার স্বর তোলে। তারপর একদিন কাফের বলে কল্লা কাটে, ধড় থেকে গলা নামিয়ে দেয়, তাদেরই কোনও উন্মাদ ভক্ত। সব ধর্মেই এই হিসেবটা এক, ছকটা একই রকম।

গৌরি লঙ্কেশকে মেরে হিন্দু ধর্ম খতরে মে হ্যায়, সেই খতরা থেকে বার করার চেষ্টা চলে, আল্লার অবমাননা বলে পত্রিকার সম্পাদককে গুলি করে মারা হয় ফ্রান্সে, এদেশে আব্বাস সিদ্দিকি হাততালি দেয়। বাংলাদেশ, যে দেশের এখনও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সে দেশেও জাতীয় কবির নাম নজরুল ইসলাম, সারা জীবনে অন্তত শ খানেক শ্যামাসঙ্গীত রচনা করেছেন, আমরা শেখ মুজিবর রহমানকে দেখেছি দুর্গাপুজোর উৎসবে সামিল হতে, প্যান্ডেলে গেছেন হাসিনা, এদেশের বহু মুসলমান ধর্মপ্রাণ নেতা, আম আদমি, শিক্ষিত বিচক্ষণ মানুষ, কবি শিল্পীকে দেখেছি দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে যেতে, তা নিয়ে আব্বাস সিদ্দিকি কী বলছে? কলকাতার বহু প্যান্ডেল বহু চার্চ, বহু মসজিদ, বহু প্রাসাদের নকল করে তৈরি করা হয়েছে। মানুষ সব জায়গায় যেতে পারেন না। কাবাতে তো যাওয়াই সম্ভব নয়, তো পাড়ার মোড়ে কাবা দেখতে পেল, আব্বাস সিদ্দিকির সেটা না পসন্দ, এটা নাকি ইসলামকে হেয় করার জন্য করা হয়, এবং ইসলামকে হেয় করা হলে ধড় থেকে মাথা নামানোর অধিকার তেনার আছে, তা তিনি আগেই বলে রেখেছেন।

আসলে মৌলবাদ এক সামাজিক রাজনৈতিক অসুখ, তা যে কোনও অগণতান্ত্রিক প্রেক্ষিতে বেড়ে উঠতে পারে, কখনও ধর্মকে আশ্রয় করে, কখনও বা কোনও উন্মাদের রাজনৈতিক দর্শনকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। বেড়ে ওঠে গণতান্ত্রিক আবহে। যেখানে প্রত্যেককে কথা বলতে দেওয়া হয়। প্রত্যেকের কথা বলার অধিকার থাকে। তারই সুযোগ নিয়ে বেড়ে ওঠে, এবং তারপর তারা এক দানবের রুপ নেয়। ধর্মীয় মৌলবাদ তারই এক চুড়ান্ত রূপ। যে ধর্মীয় মৌলবাদকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে নাৎসী পার্টি, আরএসএস বিজেপি, সেই চেহারাই আমরা দেখেছি বিভিন্ন ইসলামিক মৌলবাদি দেশ আর সংগঠনে।আজ ধর্মীয় মৌলবাদেরই এক সংস্করণ এই আব্বাস সিদ্দিকি, যে মনে করে প্রত্যেক ইসলাম মতালম্বি আসলে শোষিত, নিপিড়িত, তাদের এক হয়ে বাকিদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, সেই লড়াইকে জেহাদের চেহারা দিতে চায়। সেই জেহাদি ভাষণ দিয়ে বেড়ায় এরা মহল্লায় মহল্লায়।

আরও পড়ুন : চতুর্থ স্তম্ভ  : সোনার ফসল ফলায় যারা……

মুসলমান মানুষজন প্যান্ডেলে যাচ্ছে, উৎসবে অংশগ্রহণ করছে, এতে তেনার সুবিধে, হাজিসাহেব দুর্গাপুজোর ফিতে কাটছে এতে তেনার অসুবিধে, কাবা শরিফের আকারে পুজোর প্যান্ডেল হচ্ছে এতে তেনার অসুবিধে। হতেই পারে কোনও বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের অসুবিধে হতেই পারে, ডাক্তার দেখানো হোক। কিন্তু এখানেই তো সে থেমে থাকছে না, ধড় থেকে মাথা নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে, এবং মজার কথা সেই হুমকি দিয়ে পারও পেয়ে যাচ্ছে। আমি আপনি যদি সেই হুমকি দিই? তাহলে দেশের আইন আমাকে শাস্তি দেবে না? এইখানে মৌলবাদিরা সব্বাই এক। এরকমই হুমকি শোনা যায় আদিত্যনাথ যোগীর গলায়, একের বদলে পাঁচটা লাশের হুমকি, সবক শিখানে কা হুমকি, সে হল হিন্দু মৌলবাদ। যেখানে একজন অহিন্দুকে, সংখ্যালঘুকে জানে মারার হুমকি দেওয়া হয় আমরা তার বিরোধী, আবার এই মুসলিম মৌলবাদ, কথায় কথায় কল্লা নামানোর ফতোয়া দেওয়ার এই মোল্লাতন্ত্রের বিরোধিতাও আমরা করি, এরা একে অন্যের পরিপূরক। এদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, ওদেশের সংখ্যাগুরুদের অত্যাচারকে জায়জ করে তোলে, সেখানে ইসলামিক মৌলবাদ আর হিন্দু মৌলবাদ ভাই ভাই। আমরা দুটোর বিরুদ্ধে, আমরা যে কোনও মৌলবাদের বিরুদ্ধে। এই বাংলায় গত বিধানসভার নির্বাচন ছিল ওই হিন্দু মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, আমরা খোলাখুলিই দাঁড়িয়ে ছিলাম তাদের বিরুদ্ধে, কিন্তু আজ যখন এক নিম্নরুচির অশিক্ষিত আব্বাস গলা তোলে তখন আমাদের দায় থাকে বইকি, আমরা তারও বিরোধিতা করি। রাজ্য সরকার প্রশাসনের কাছে আবেদন রইল, গ্রেফতার করুন এই উন্মাদকে। এই বাংলায় ধর্ম যার যার, উৎসব সব্বার হয়ে উঠুক, মাহমুদা সুলতানারা সামিল হোক শারদ উৎসবে, শামিম আহমেদের কাছে আমরা শুনি রামায়ণের নতুন পাঠ, এ বাংলায় শাশ্বত হয়ে থাক সবার রংয়ে রং মেলানোর ডাক।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
আগামিকাল মুর্শিদাবাদে সেলিমের পরীক্ষা, ১৩ মে বহরমপুরে অধীরের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
শাহের মুখে সন্দেশখালি আছে, নেই ভিডিও নিয়ে কোনও কথা
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
বেহাল সড়ক, প্রশাসনকে জানিয়েও হয়নি লাভ
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team