কলকাতা: এসআইআর (SIR) শুনানি ঘিরে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে। দীর্ঘদিনের ভোটার হয়েও বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা শুনানির নোটিস পেয়েছেন। নাম কেটে যাওয়ার আশঙ্কায় বাধ্য হয়েই শুনানি কেন্দ্রে হাজিরা দিতে হচ্ছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিকে ‘আমজনতার হেনস্তা’ বলে তীব্র প্রতিবাদে সরব হলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
রবিবার বিএলএ–২-দের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক ঘোষণা করেন, এই হেনস্তার প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন: প্রত্যেক SIR শুনানি কেন্দ্রের পাশে তৃণমূলের সহায়তা শিবির, ঘোষণা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
শনিবার থেকেই এসআইআর-এর শুনানি শুরু হতেই সামনে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর ছবি। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে কলকাতার চেতলা গার্লস স্কুলের শুনানি কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ৯০ বছরের এক বৃদ্ধকে। অথচ নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছিল, ৮৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণ ভোটারদের শুনানিতে ডাকা হবে না। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠেছে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে প্রসবের দিনেই হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সব ঘটনার উল্লেখ করে বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়,
“বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এভাবে হেনস্তা বরদাস্ত করা হবে না। তৃণমূলের তরফে আগামিকাল প্রতিনিধিদল কমিশনে যাবে।” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “যদি প্রবীণদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে শুনানির ক্ষেত্রেও সেই সুবিধা থাকবে না কেন?”
এদিন বিজেপিকেও তীব্র আক্রমণ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। অভিষেক বলেন, “বিজেপির কাছে এজেন্সি আছে, তৃণমূলের আছে কর্মী। ওরা আজ পর্যন্ত কোনও রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেনি। আমরা উন্নয়নের পাঁচালি প্রকাশ করেছি। আমরা দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই, আর ওরা দোষীদের সাদরে গ্রহণ করে।”
হুঙ্কার দিয়ে তাঁর সংযোজন, “বিজেপি বাংলার ডিএনএ বোঝে না। ভাগাভাগি আর দাঙ্গার রাজনীতি করে বাংলায় ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু বাংলার ডিএনএ বদলাতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, শনিবারই এসআইআর শুনানিতে বৃদ্ধদের হেনস্তার প্রতিবাদ জানিয়ে সিইও দপ্তরে চিঠি দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, নির্বাচন কমিশন কার্যত বিজেপির শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। সব মিলিয়ে, এসআইআর শুনানি ঘিরে প্রশাসন বনাম শাসক দলের সংঘাত আরও তীব্র হল, আর সোমবারের কমিশন অভিযানে নজর রাজ্য রাজনীতির।