স্পেন-৫ স্লোভাকিয়া–০
(দুব্রাভকা-নিজ গোল, লাপোর্তে, সারাবিয়া, ফেরান টোরেস, কুচকা-নিজ গোল)
ইউরোর প্রথম দুটি ম্যাচে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ড্র করে অবশেষে স্পেন চ্যাম্পিয়নের মতো খেলল গ্রূপের শেষ ম্যাচে। নিজেদের শহর সেভিয়াতে স্পেন ছিন্নভিন্ন করে দিল স্লোভাকিয়াকে, যারা পোল্যান্ডকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল সবাইকে। কিন্তু বুধবার ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্পেন যা খেলেছে তাতে তারা আরও বেশি গোলে জিততে পারত। এগারো মিনিটৈই পেনাল্টি নষ্ট করেন জুভেন্তাস স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। কিন্তু তার পর স্পেনের পাসিং ফুটবলের কোনও হদিশ পায়নি স্লোভাকিয়া। স্পেনের অধিনায়ক সের্জিও বুসকোয়েটস এদিনই প্রথম মাঠে নামলেন। করোনা সারিয়ে তিনি যে এখন ফিট তার প্রমাণ দিলেন বিশ্ব কাপ জয়ী বার্সেলোনা তারকা। ৭১ মিনিটে তিনি যখন মাঠ ছাড়ছেন তখন স্পেন পাঁচ গোল করে ফেলেছে। মাঝ মাঠ দখলের জন্য একজন নেতার দরকার হয়। আটলেটিকো মাদ্রিদের মিডফিল্ডার কোকে অবশ্যই ছিলেন। ভাল খেলেছেনও তিনি। কিন্তু বুসকোয়েটস নামার পর স্পেনের খেলাটাই বদলে যায়। তবে দিনের সেরা বুসকোয়েটস নন, সেই সম্মান দিতে হবে বার্সেলোনারই মিডফিল্ডার পেদ্রিকে। লেফট হাফ পেদ্রি শুধু সারাক্ষণ দাপিয়েই বেড়াননি, তাঁর পাস থেকেই বেশির ভাগ গোল হয়েছে। তবে সুইডেন ৩-২ গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়ে দেওয়ায় ই গ্রূপে স্পেন হল রানার্স। প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে তারা এবার মুখোমুখি হবে ক্রোয়াশিয়ার।
টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে গেলে স্পেনকে এই ম্যাচে জিততেই হত। আগের দুটো ম্যাচ থেকে তাদের পয়েন্ট ছিল দুই। সুইডেন চার পয়েন্ট হাতে নিয়ে খেলতে নেমেছিল। স্লোভাকিয়ার হাতে ছিল তিন পয়েন্ট। জিততেই হবে, তাই স্পেনের কোচ লুই এনরিকে ৪-৩-৩ ছকে টিম নামিয়েছিলেন। সামনে জেরার্ড মোরেনো, পাবলেো সারাবিয়া এবং আলভারো মোরাতা। এগারো মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত স্পেন। বক্সের মধ্যে রোমাডো ফাউল করলেন কোকেকে। মোরাতার পেনাল্টি শট বাঁচিয়ে দিলেন নিউ ক্যাসলের দ্রুভাবকা। কিন্তু তিরিশ মিনিটের মাথায় এই দুব্রাভকাই একটি আত্মঘাতী গোল খাইয়ে দিলেন। সারাবিয়া শটটা নিয়েছিলেন। বল পোস্টে লেগে স্লোভাকিয়া গোলকিপারের কাছে যাওয়ার পথে তাঁর হাতে লেগে গোলে ঢুকে যায়।
প্রথমার্দ্ধের সংযুক্ত সময়ের তিন মিনিটে স্পেন ২-০ করে ফেলল। পেদ্রির কর্নার মোরেনো পাস করেন গোল করার জন্য উঠে আসা সেন্টার ব্যাক লাপোর্তাকে। হেড করে স্পেনের হয়ে জীবনের প্রথম গোল করলেন লাপোর্তা। বিরতিতে ২-০ এগিয়ে থাকা স্পেন দ্বিতীয়ার্দ্ধে হা রে রে রে করে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্লোভাকিয়ার উপরে। ৫৬ মিনিটেই পেদ্রির পাস থেকে পাবলো সারাবিয়া বাঁ পায়ের শটে ৩-০ করে ফেললেন। আর চতুর্থ গোলটা ফেরান টোরেসের। সুপার সাব টোরেস মাঠে নেমে প্রথম যে বলটা টাচ করলেন সেটাই গোল। পেদ্রি শর্ট কর্নার করে বল দেন সারাবিয়াকে। তাঁর পাস থেকে বল পেয়ে টোরেসের শট গোলে ঢুকে যায়। তখন ম্যাচের ৬৭ মিনিট। চার গোল খেয়েও শান্তি হয়নি স্লোভাকিয়ার। ৭১ মিনিটে কুচকা আবার একটি আত্মঘাতী গোল করে বসলেন। পর্তুগালের মতো স্লোভাকিয়াও দুটো আত্মঘাতী গোল খেল। আর এই প্রথম ইউরো কাপের কোনও ম্যাচে স্পেন পাঁচ গোল করল। এবার তারা লুকা মদ্রিচদের ক্রোয়াশিয়াকে হারাতে পারে কিনা তাই এখন দেখার। সে ম্যাচে যেই জিতুক একটা বড় টিমকে প্রিকোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হবে।