চেক প্রজাতন্ত্র–২ নেদারল্যান্ডস–০
(টমাস হোলস, প্যাট্রিক সিক)
এবারের ইউরোতে সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটাল চেক প্রজাতন্ত্র। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বুদাপেস্টের পুসকাস এরিনায় ৫৬ হাজার দর্শকের সামনে তারা নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ডাচ সেন্টার ব্যাক ম্যাথিয়াস ডিলিট বক্সের সামনে হ্যান্ডবল করে লাল কার্ড দেখলেন। জুভেন্তাসের এই প্লেয়ারটি বেরিয়ে যাওয়ার পরেই ম্যাচের উপর জাঁকিয়ে বসে চেক। ৬৮ মিনিটে মিডফিল্ডার টমাস হোলস গোল করার পর ৮০ মিনিটে গোল করলেন প্যাট্রিক সিক। এবারের টুর্নামেন্টে চারটি গোল হয়ে গেল বেয়ার লেভারকুসেনের এই স্ট্রাইকারের। কোয়ার্টার ফাইনালে ৩ জুলাই চেক প্রজাতন্ত্র খেলবে ডেনমার্কের সঙ্গে। ম্যাচটি হবে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে।
চেকদের বিরুদ্ধে নিশ্চিতভাবেই ফেভারিট ছিল নেদারল্যান্ডস। ১৯৮৮-র ইউরো চ্যাম্পিয়নরা ইদানিং বড় আসরে খুব বেশি দূর এগোতে পারছিল না। ২০১৪-র বিশ্ব কাপে তারা সেমিফাইনালে হারে আর্জেন্তিনার কাছে। তারপর থেকে তাদের হয়ে বলার মতো কিছু ছিল না। এবার অবশ্য বেশ কয়েকজন নতুন ফুটবলার উঠে আসায় ডাচদের নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাদের সমর্থকরা। রবিবার ছাপ্পান্ন হাজার দর্শকের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল ডাচ। তাদের সমর্থনে নেদারল্যান্ডস শুরুটাও করেছিল ভাল। প্রথমার্দ্ধে তারা যা সুযোগ পেয়েছে তাতে গোল করতে পারলে ম্যাচের রঙ অন্যরকম হত। দুই সেন্টার ব্যাক ড্যাঞ্জেল ডামফ্রিস এবং প্যাট্রিক ফান আনহল্ট ওভারল্যাপে উঠে গোল করার মতো বলের জোগান দিয়েছিলেন। স্ট্রাইকার মেম্ফিস ডিপে অন্তত তিন বার গোল করার মতো জায়গায় পৌছেও আসল কাজটা করতে পারেননি। সুযোগ পে্য়েও তা নষ্ট করেছেন ডোনয়েল মালেন। মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্ক দে জং আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন বল জোগান দিতে। কিন্তু দিনটা তো তাদের ছিল না।
চেক ফুটবলাররা জানত নেদারল্যান্ডস তাদের চেয়ে অনেক ভাল টিম। তারা কোনও তাড়াহুড়ো করেনি। আবার ডিফেন্সিভ ফুটবলও খেলেনি। কাউন্টার অ্যাটাকে তারা গেছে আক্রমণে। গোলের জন্য ছোঁকছোঁকনি ছিল। কিন্তু মোক্ষম কামড় দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। সেটাই তারা পেয়ে গেল ডিলিটের লাল কার্ড দেখার পর। এই ঘটনাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ডাচরা দশজনে হয়ে যাওয়ার পরেই রে রে করে তেড়ে এল চেকরা। চেকদের স্ট্যান্ড ইন ক্যাপ্টেন টমাস সৌচেক এবং আন্তোনিন বারাকের যৌথ উদ্যোগে একটার পর একটা চেক আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে ডাচ ডিফেন্সের উপর। এবং এর ভার সইতে পারেনি তারা।
৬৮ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে পাওয়া একটা উঁচু বল কালাস অনেকটা উঠে হেড করে নামিয়ে দেন হোলসের জন্য। জোরাল শটে ডাচ গোলকিপার মার্টেন স্টেকলেনবার্গকে নড়তে দেননি হোলস। ৮০ মিনিটে এই হোলসই চমৎকার পাস দিয়ে সিককে দিয়ে গোল করালেন। ম্যাচ ওখানেই শেষ। এই ম্যাচটা দেখাল নক আউটে ফেভারিট বলে কিছু হয় না। শনিবার অস্ট্রিয়া অতিরিক্ত সময় অবধি টেনে নিয়ে গিয়েছিল ইতালিকে। আর রবিবার চেকরা তো বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিল ডাচদের। এবার তাদের সামনে ডেনমার্ক, যারা অনেক প্রতিকূলতাকে জয় করে উঠেছে শেষ আটে। শনিবার একটা ভাল ম্যাচ দেখার প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।