সত্যিটা কে বলছিলেন? নেতা কোহলি নাকি বোর্ড সভাপতি সৌরভ?–স্পষ্ট আভাষটা দিলেন এবার সিনিয়র জাতীয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান চেতন শর্মা। শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে জন্য দল নির্বাচন হয়। সেই দল নির্বাচনী ঘোষণার পর, ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সের মাঝে চেতনকে এই নিয়ে বেশ কিছু কথা বলতে শোনা গেল। আর তাতেই আবার সেই বিতর্কের আগুন উস্কে দেওয়া হয়ে গেল!
কোহলি তাহলে সত্যি কথা বলছেন না ? অন্তত এমনটাই যেন শোনালেন এবার নির্বাচক কমিটির প্রধান চেতন শর্মা। বিরাট কোহলি বনাম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিতর্কে সরাসরি বোর্ড প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়েই(এটাই স্বাভাবিক ছিল) চেতন বলে গেলেন, টি২০ বিশ্বকাপের আগে নেওয়া কোহলির নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তে বোর্ডের পক্ষ থেকে সেই নিজের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়েছিল।
বোর্ড সভাপতি সৌরভও একই ইংগিত দিয়াছিলেন। ওয়ানডে নেতা হিসেবে রোহিত শর্মাকে বেছে নেওয়ার পরে এই বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল। বোর্ড সভাপতির বক্তব্য স্পষ্ট ছিল। কোহলিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে (২০২১) টি২০-র নেতৃত্ব ছাড়তে বারণ করা হয়েছিল। তবে তা কানে তোলেননি কোহলি। বোর্ড নাকি লাল বল (টেস্ট) আর সাদা বলের (ওয়ান ডে এবং টি টোয়ান্টি) জন্য আলাদা নেতা নিয়ে চলার কথা ভেবে নিয়েছিল। জাতীয় নির্বাচকরাই সেটা বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের কাছে দাবি করেছিলেন। বোর্ড তাতে সায় দিয়ে দিয়েছিল।
সৌরভের বলা যুক্তি উড়িয়ে আবার কোহলি বলেছিলেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে নেতৃত্ব ছাড়ার ইস্যুতে কোনও অনুরোধই আসেনি। বরং তাঁর পদত্যাগ ভালভাবেই গ্রহণ করে বোর্ড। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে উড়ে যাওয়ার আগে ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে বলা কোহলি কথা- সেই বিতর্কের আগুন এখনও নিভছে না।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে সিরিজের দল ঘোষণার সময় সেই বিতর্ক আবার নতুন করে উস্কে দিয়েছেন নির্বাচন কমিটি প্রধান- চেতন শর্মা।
তিনি সাংবাদিকদের এক উত্তরের জবাবে বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে যখন নির্বাচনী বৈঠক শুরু হয়, তখন সকলেই কার্যত অবাক হয়ে গিয়েছিলাম বিরাটের সিদ্ধান্তের কথা শুনে। তখন মিটিংয়ে উপস্থিত সকলেই ওঁকে সিদ্ধান্ত ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করে। সেই সময় আমাদের মনে হয়েছিল, বিরাটের এমন সিদ্ধান্ত কয়েকদিন পরেই টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপে ভারতের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে। ওঁকে অনুরোধ করা সকলেই বলে, ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে ও যেন অধিনায়কত্ব চালিয়ে যায়। সেই মিটিংয়ে ছিলেন- বোর্ড সচিব, বোর্ড সভাপতি আর আমরা নির্বাচকরা সকলেই। তবে ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলায়, আমরাও শেষমেশ সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে বাধ্য হই’।
স্বাভাবিক কারণেই চেতন শর্মাকে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সেইদিন সেই সভায় কী কোহলিকে জানানো হয় যে টি২০-র নেতৃত্ব ছাড়লে ওয়ানডের নেতৃত্বও ছাড়তে হবে? এর জবাবে চেতন বলেন, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে যে বোর্ড একজনকেই অধিনায়ক দেখতে চায়, সেটা টি২০ বিশ্ব কাপের দল নির্বাচনী বৈঠকে বলার কী সঠিক সময় ছিল? ছিল না। কারণ সেটা ৫০ ওভারের ক্রিকেট নিয়ে ভারনা ছিল। সেই সভায় আমরা বিশ্বকাপে দল বাছাই করতে চলেছি। সেই সময় কোহলিকে জানানোটা সম্ভব ছিল না যে- তুমি টি২০-র নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছ যখন , ওয়ানডের নেতৃত্বও ছেড়ে দাও। টি২০ বিশ্বকাপের পরেও একবার সকলে ওঁকে সেই সিদ্ধান্ত ভেবে দেখার অনুরোধ করেছিল’।
জাতীয় নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান মুখ খুললেন।
একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বোর্ডের পদাধিকারীরা নয় বরং কোহলিকে ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণই নির্বাচকদের ছিল। এমনটাও জানিয়ে দিয়েছেন চেতন। ‘নির্বাচক কমিটির সকলেই যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে যে সাদা বলের ক্রিকেটে দুই অধিনায়ক নিয়ে চললে দলের ছন্দ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই আমিই বিরাটকে ফোন করেছিলাম। সেটা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট দল নির্বাচনের মিটিং ছিল’L
কখন তিনি বিরাটকে ফোন করেন, তার সময় পর্যন্ত বলে দেন। ‘ভারতীয় সময় বিকাল ৫টার সময় ফোনে ওঁকে জানানো হয় যে- জাতীয় দলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে একজন আর টেস্টে অন্য একজনকে নেতৃত্বে রাখা হবে। আমাদের ফোনের কথাবার্তা এরপর ভালই এগোয়। একেবারে ওয়ান ডে ম্যাচের জন্য নির্বাচনী মিটিংয়ে ওঁকে না জানিয়ে আগেভাগে এটা জানানোর জন্যই ফোনে ওঁকে সেদিন তা জানিয়ে দিয়েছিলাম’।
We are here at The Wanderers to prepare for the 2nd Test 🏟️
New Day 🌞
New Year 👌
New Start 😃
Same Focus 💪Lets GO #TeamIndia | #SAvIND pic.twitter.com/S2vXnumhMD
— BCCI (@BCCI) January 1, 2022
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে:
প্রথম টেস্ট জিতেই পরের টেস্টের জন্য মাঠে নেমে পড়েছে টিম ইন্ডিয়া। ওয়ানডারারার্সে শনিবার চুটিয়ে নেট প্র্যাকটিস সারলেন সকলে। কোচ রাহুল দ্রাবিড় দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা করে সময় দেন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলার টেকনিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ছবি:সৌ টুইটার