নানা পরিধানের দেশ ভারতবর্ষ।প্রায় বেশিরভাগ ভারতীয়দের কাছে তাঁর নিজস্ব ধর্মের মূল্য সর্বাধিক। নিত্যদিন লক্ষ লক্ষ ভক্ত এখানে দেবতার আরাধনা করেন। ধর্মীয় বিশ্বাস জোরদার বলেই দেশজুড়ে রয়েছে অগুনতি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং আরাধনা স্থল।এছাড়াও হিন্দু ধর্মের যে সমস্ত দেবতাদের বাহন রয়েছে ভক্তেরা সেই সমস্ত হন তথা পশুদের মন্দির রয়েছে দেশের আনাচে কানাচে। সেসব জায়গার কথা শুনলে যে কারও তাক লেগে যাবে।চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত মন্দিরের বিষয়ে।
রাজস্থানের ইঁদুরের মন্দির: রাজস্থানের কর্ণী মাতার মন্দিরে ইতিউতি ঘুরে বেড়ায় পাল পাল ইঁদুর। তাঁরা এই ইঁদুর গুলিকে পবিত্র বলে মনে করেন।প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার ভক্ত যান ওই মন্দির দর্শনে।কিন্তু সেখানে ভক্তদের থেকে ইঁদুরের সংখ্যাই বেশি। ইঁদুরদের কেউ আঘাত করে না। পায়ের উপর দিয়ে ইঁদুর চলে গেলেও বিরক্ত হওয়া বারণ এখানে। কারণে ইঁদুর মারা এখানে ধর্মীয় পাপ। এখানে মানুষের থেকে মন্দিরের ইঁদুরের প্রাণের মূল্য বেশি। ভক্তদের বিশ্বাস এই ইঁদুরগুলি নাকি কর্ণী মাতার পরিবারের সদস্য।এছাড়াও আরও একটি অবাককর বিষয় হল এই মন্ধিরে ইঁদুরের পাশাপাশি বছরের পর বছর বেড়ালেও ঘুরে বেড়ায়।কিন্তু এর কারণে কোনও দিন রোগ ছড়ায়নি।
আরও পড়ুন: Tripura Incident | গরু চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্য়া যুববকে, গ্রেফতার ২
ব্যাঙ্গালোরের ষাঁড়ের মন্দির: শুধু গরুই নয়, হিন্দু ধর্মে ষাঁড়ও খুব পবিত্র। বেঙ্গালোরের প্রাচীনতম মন্দিরটিতেই ষাঁড়ের আরাধনা করা হয়। এই শহরের অন্যতম দর্শণীয় স্থান এটি। এখানকার আরাধ্য দেবতা ষাঁড় অর্থাৎ নন্দী দেব। নন্দী শিবের সঙ্গী। মন্দিরের ভিতরে বিশালাকার নন্দী মূর্তি রয়েছে। মনে করা হয় এই নন্দী মূর্তির পাদদেশ থেকেই বিশ্ব ভারতী নদীর সৃষ্টি হয়েছে।
কেরলের স্বর্প মন্দির: স্যাপ দখলে ভয় পান অনেকেই। বেশির ভাগ মানুষ আবার মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। অথচ কেরলের স্বর্ণ মন্দিরে সেই সাপকেই পুজো করা হয় দেবতা জ্ঞানে। সাপ দেবাদিদেব মহাদেবের বাহন।কেরলের মান্নারাসানা শ্রী নাগরাজ মন্দিরে সাপকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করা হয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বর্গ মন্দির। মন্দিরের ভিতরে প্রায় ৩০,০০০ সাপের ছবি ও মূর্তি রয়েছে। নিঃসন্তান মহিলারা এখানে সন্তানের আশায় মানত করেন করেন। ধর্মীয় বিশ্বাস, মন্দিরে সাপের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে মানত করলে নাকি মায়েদের কোন ভরে যাবে।
জয়পুরের হনুমান মন্দির: রামায়ণের সুবাদে হনুমান বা বানর হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র প্রাণী। আর রাজস্থানের জয়পুরের গলতাজি মন্দিরে হনুমানের পুজো করা হয়। মন্দিরের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ায় বানরের দল। কেউ তাদের কিছু বলে না। দর্শণার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করার পর বানরদের কলা, বাদাম ইত্যাদি খাবার দেন। মন্দিরে পুজো না দিলেও অনেকে বাঁদরদের খাবার খাওয়ানোর উদ্দেশ্যেও মন্দিরে যান।
কর্ণাটকের কুকুর মন্দির: উত্তরপূর্ব ভারতে কুকুরের মাংস প্রসিদ্ধ। অথচ কর্ণাটকের একটি মন্দিরে কুকুরের পুজো করেন ভক্তরা। কর্ণাটকের চন্নাপতনার অগ্রাহরার ভালাগেরেহাল্লি গ্রামে রয়েছে এই মন্দিরটি। কুকুর অত্যন্ত নিঃস্বার্থ, অনুগত এবং বিশ্বস্ত প্রাণী। তাঁরা গ্রামকে রক্ষা করে। এই কারণেই গ্রামবাসীরা এই মন্দিরে কুকুরের পুজো করে থাকেন।