বসিরহাট: সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। উমা (Uma) মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। উমার বিদায়বেলায় ইছামতীর (Ichamati River) পাড়ে দুই বাংলার মিলন। নির্বিঘ্নে শেষ হল দুই বাংলার বিসর্জন। এপারে বসিরহাটের টাকি (Taki), ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। মাঝখানে বয়ে চলেছে ইছামতী। দশমীর সকালে ইছামতীতে শুরু হয় দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন।
দশমীর দিন ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জনের রেওয়াজ বহু বছর ধরে চলে আসছে। এই একটা দিন ভারত-বাংলাদেশের জলরেখার ভৌগোলিক ভাগ যেন কার্যত মুছে যায়। নদীবক্ষে ওপার থেকে ভেসে আসে ঢাকের বোল। এপার মুখরিত হয় ‘আসছে বছর আবার হবে’ ধ্বনিতে। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। এ দৃশ্যে বুকের ভিতর কোথাও যেন বাঙালির সনাতনী-চিরন্তনী সমস্ত সত্ত্বা আরও আবেগবিহ্বল হয়ে ওঠে। প্রতি দুই দেশের এই বিসর্জন দেখতে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান দুই দেশের নদী-সীমান্তে। বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৫টা অবধি এই ইছামতীর ধার যেন আবেগের মিলনক্ষেত্র। এই নিরঞ্জনে অংশ নিতে পুজো উদ্যোক্তাদের পুরসভা ও পুলিশের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হয়। তা দেখিয়েই বোটে ওঠার সুযোগ মেলে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুলিশ আর কাউন্সিল এই অনুমতি দেয়। যদিও বাংলাদেশের নৌকার সংখ্যা এবার তুলনামূলক অনেকটাই কম বলে জানা গিয়েছে। বরং ভারতের নৌকার সংখ্যা ৫০০ উপরে। টাকিতে রাজবাড়ি ঘাট, ঘোষবাবুর ঘাট, মুক্তবাবুর ঘাটেই মূলত বিসর্জন হয়। হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয় এদিন। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার সঙ্গে চলে বিএসএফের টহলদারি। নদীবক্ষে বিএসএফের স্পিড বোট দিয়ে তৈরি হয় অস্থায়ী বর্ডার।দিনের জন্য দুই দেশের নদী-সীমান্ত এই স্পিড বোটই নির্দিষ্ট করে দেয়। বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই বিসর্জন দেখতে। বোটের টিকিট পেতে গেলে আগাম তা কেটে রাখতে হয়।