নয়াদিল্লি: একুশের বঙ্গ ভোটে বিপর্যয়ের পর ‘সভাপতি টু সভাপতি’ বৈঠক৷ আর প্রথম বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির হাল-হকিকত নিয়ে জেপি নাড্ডার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন দিলীপ ঘোষ৷ সেই বৈঠকে উঠে আসে বাবুল প্রসঙ্গ৷ মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ার পর আসানসোলের সাংসদ হঠাৎ করে মুকুল রায় ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ট্যুইটারে ফলো করা শুরু করেছেন৷ এ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে৷ যথারীতি বাবুলকে নিয়ে আলোচনা হয় জেপি নাড্ডা ও দিলীপ ঘোষের মধ্যেও৷ পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাবুল কাকে ফলো করবেন সেটা তাঁকে জিজ্ঞাসা করুন৷ আমি দলকেই ফলো করি৷’
আরও পড়ুন: মমতার নন্দীগ্রাম মামলার বিচারপতি শম্পা সরকার
আজ সোমবার দিল্লিতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেন দিলীপ ঘোষ৷ দীর্ঘ বৈঠকে অনেক কিছু নিয়েই দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়৷ তবে কিছু নেতা দলীয় শৃঙ্খলা মানছেন না বলে নাড্ডাকে রিপোর্ট করেন দিলীপ৷ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কেউ কেউ না বুঝে অনেক কথা বলছেন৷ যে কথাগুলো দলের ভেতর বলা দরকার সেটা বাইরে বলছেন৷ এতে কার্যকর্তাদের মনোবল নষ্ট হচ্ছে৷ স্বভাব না পাল্টালে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’ এক সাংবাদিক বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে প্রশ্ন করেন৷ উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সব ব্যাপারে কথা হয়েছে৷ সব বলেছি৷’
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর তদন্তে মহিষাদলে সিআইডি
বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর বিজেপির ‘আচ্ছে দিন’ চলে গিয়েছে৷ নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতা-নেত্রীরা এখন ডাঙায় আটকে যাওয়া মাছের মতো ছটফট করছেন৷ জলে ফেরার প্রবল আকুতি৷ এর ফলে বঙ্গ বিজেপি এখন তাসের ঘর৷ ভোটের আগে ঠিক এই ছবি ছিল তৃণমূলের৷ বিক্ষুব্ধদের দম আটকে যাচ্ছিল দলে৷ প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে তাঁরা বিজেপিতে আসেন৷ কিন্তু ২ মে ফল প্রকাশের পর তাঁদের শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়৷ এরা না পারছেন পুরনো দলে ফিরতে, না পারছেন বিজেপিতে থাকতে৷ ব্যতিক্রম একমাত্র মুকুল রায়৷
আরও পড়ুন: সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে
সেই মুকুল রায়কে হঠাৎ করে ট্যুইটারে ফলো করা শুরু করেছেন বাবুল সুপ্রিয়৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের পর বাদ পড়েন বাবুল৷ এ নিয়ে নিজের ক্ষোভ চাপা রাখেননি তিনি৷ ট্যুইটার বায়ো পরিবর্তন করে রাজনীতি থেকে দূরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন৷ এই বাবুল সুপ্রিয় ২০১৪ সালে প্রথম লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হন। মন্ত্রিসভায় স্থানও পান। তারপর থেকে টানা ৭ বছর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। নরেন্দ্র মোদির প্রিয়পাত্রও ছিলেন। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে বিবাদ হলেও দলের বিরুদ্ধে সে ভাবে মুখ খোলেননি। কিন্তু মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়ার পর দলের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব তৈরি হচ্ছে বাবুলের৷