দেওয়ার কথা একটা ডোজ। কিন্তু নিজের খেয়াল বশেই হোক, বা ইচ্ছাকৃত ভাবে, এক মহিলাকে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ দিয়ে ফেললেন স্বাস্থ্যকর্মী। মাঝে শুধু ১০ মিনিটের ব্যবধান। টিকার একটা ডোজ নিলেই অনেকের শরীরেই দেখা দেয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একসঙ্গে দু’টো ডোজ। তাহলে কি হবে মন্দিরার ?
ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার রাজমাধপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক পরিবারে। যাঁর সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছে, তিনি ওই পরিবারের গৃহবধূ মন্দিরা পাল। তিনি স্থানীয় আশাকর্মীর মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের মায়েদের টিকা দেওয়া হবে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। খবর পেয়ে শুক্রবার নিজের ৯ মাসের কোলের দ্বিতীয় সন্তানকে নিয়ে গ্রাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা পখন্না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন মন্দিরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর আধার কার্ড দেখে আর পাঁচ জন মায়ের মতোই নির্দিষ্ট অ্যালপে তথ্য এন্ট্রি করেন সাস্থ্যকর্মীরা। এরপর তাঁর বাম হাতে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ দেন এক স্বাস্থ্য কর্মী। এরপর নিয়ম অনুযায়ী মন্দিরা পালকে কিছুক্ষণ বসতে বলেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ফের ওই স্বাস্থ্য কর্মী আবার তাঁর বাম হাতে টিকার দ্বিতীয় ইঞ্জেকশান দেন। টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে মন্দিরা দেবী অন্যান্যদের মুখে শুনেছিলেন টিকার দুটি ইঞ্জেকশান নিতে হবে। কিন্তু তা যে নির্দিষ্ট দিন অন্তর দেওয়ার নিয়ম তা জানতেন না তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি টিকার দ্বিতীয় ইঞ্জেকশান দেওয়ার সময় প্রতিবাদ জানাননি। পরে অন্যান্যদের একটি ইঞ্জেকশান দেওয়া হয়েছে শুনে তাঁকে কেন দুটি ইঞ্জেকশান দেওয়া হল তা জানতে চান স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে। মন্দিরা পালের দাবি একথা স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে জানতে চাওয়ায় তাঁদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। এরপর মন্দিরা দেবীকে প্রায় এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বসিয়ে রাখা হয় হাসপাতালে। পরে ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ এ সঙ্গে দেওয়া হলেও মন্দিরা পালের শরীরে এখনও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে আতঙ্ক যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না পরিবারের। ৯ মাসের শিশু সন্তান স্তন্যপান করায় শিশুর স্বাস্থ্য নিয়েও শঙ্কিত গোটা পরিবার। স্বাস্থ্যকর্মীর অসাবধানতার কারণে আগামীদিনে যাতে কোনো ব্যাক্তির ক্ষেত্রে একই ভুল না হয় সেই লক্ষে বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাল পরিবার। স্থানীয় বিধায়ক আলোক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”ঘটনা শুনেছি। মহিলার দাবি তদন্ত সাপেক্ষ। খবর পাওয়ার পরই স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপ করেছে। মহিলা সুস্থ আছেন। স্বাস্থ্য দফতরকে তদন্ত করতে বলেছি। তদন্তে গাফিলাতি প্রমাণ হলে শাস্তি হবে।”