যে ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল ফাইনালে সেটাই হচ্ছে সেমিফাইনালে। ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সামনে রাফায়েল নাদাল। বুধবার কোয়ার্টার ফাইনালে তিন নম্বর বাছাই নাদাল একটি সেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ৬-৩, ৪-৬, ৬-৪, ৬-০ গেমে হারালেন আর্জেন্তিনার দিয়েগো স্কোয়ার্জম্যানকে। আর শীর্ষ বাছাই জকোভিচ সেমিফাইনালে ওঠার পথে নয় নম্বর বাছাই ইতালির মাত্তেও বেরাতিনিকে হারালেন একটি সেট হেরে। জকোভিচ জিতলেন ৬-৩, ৬-২, ৬-৭ (৫-৭) এবং ৭-৫ গেমে। শুক্রবার নাদাল-জকোভিচ সেমিফাইনালের আগে অবশ্য প্রথম সেমিফাইনালে খেলবেন জার্মানির আলেকজান্দার জেরেভ এবং গ্রিসের স্টেফানো সিসিপাস।
নাদাল এবং জকোভিচের মধ্যে এর আগে রোলাঁ গারোতে আট বার দেখা হয়েছে। নাদালের পক্ষে ফল ৭-১। দুজনের মধ্যে এটা হতে চলেছে ৫৮তম সাক্ষাৎকার। নাদাল জিতেছেন ৩৬ বার। রোলাঁ গারোতে নাদালের সাফল্য ঈর্ষণীয়। তিনি এখানে তেরো বারের চ্যাম্পিয়ন। গত বারও ফাইনালে জকোভিচকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নাদাল। তবে এবার শেষ পর্যন্ত কে জিতবে তা নিয়ে আগাম ভবিষ্যৎবাণী করা যাবে না।
কারণ দু জনেই ফর্মের তুঙ্গে আছেন। নাদাল এখন পর্যন্ত ফরাসি ওপেনে ১০৭টি ম্যাচ খেলেছেন। জিতেছেন ১০৫টি ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনালে দশ নম্বর বাছাই স্কোয়ার্জম্যান প্রথম সেট ৩-৬ হারার পর দ্বিতীয় সেট ৬-৪ জিতে যান। তখন মনে হচ্ছিল বাকি ম্যাচে তিনি নাদালের বিরুদ্ধে শক্ত লড়াই গড়ে তুলবেন। কিন্তু সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে নাদাল তৃতীয় সেট ৬-৪ জিতে যান এবং চতুর্থ সেটে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দেন ৬-০ জিতে নিয়ে।
জকোভিচ এখানে শেষ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ২০১৬ সালে। কিন্তু তিনিই এখন বিশ্বের এক নম্বর। তবে মাঝে মাঝে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। বুধবারই যেমন রাত এগারোটা যখন বাজে তখন তৃতীয় সেট চলছে। কিন্তু প্যারিসে রাত এগারোটার পর আর বাইরে থাকা যাবে না। তাই হাজার পাঁচেক দর্শককে গ্যালারি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এতে সময় লাগে কুড়ি মিনিট। সেই সময় জকোভিচ এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বেরাতিনি ড্রেসিং রুমে চলে যান। তখন তৃতীয় সেট চলছে। প্রথম দুটি সেটে জকোভিচ ৬-৩, ৬-২ গেমে জিতেছিলেন। কিন্তু কুড়ি মিনিট ড্রেসিং রুমে বসে থাকার পর তাঁর ধৈর্য চ্যুতি হয়। ফিরে এসে একটা বল তিনি কোর্টের পাশে বিলবোর্ডে খুব জোরে মারেন। এর ফল পড়ে ম্যাচের উপরেও। জকোভিচ সেটটা টাই ব্রেকারে ৬-৭ (৫-৭) হারেন। তবে চতুর্থ সেটে নিজেকে সামলে নিয়ে জিতে যান ৭-৫ গেমে।
নাদাল কুড়িবার গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন। এবার যদি জেতেন তাহলে টপকে যাবেন রজার ফেদেরারকে। তাঁরও গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যা কুড়ি। আর জকোভিচ গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন ১৮টি। এবার যদি ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হন তবে সংখ্যাটি নাদাল-ফেদেরারের প্রায় কাছাকাছি হয়ে যাবে। তার চেয়েও বড় কথা তিনি হবেন সেই বিরলতম প্লেয়ার, যিনি চারটে গ্র্যান্ড স্লামই দুবার করে জিতেছেন।