কলকাতা: ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তর কলকাতার বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে। যা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই, বিজেপি করে বলেই সজল ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- ব্যাটেল ফিল্ড মুচিপাড়া থানা, সজল ঘোষকে লালবাজারে নিয়ে গেল পুলিশ
এউ বিষয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসকে এর জবাব পেতে হবে। কালকে যদি সিআরপিএফকে দিয়ে তৃণমূল নেতাদের এভাবে দরজা জানলা ভেঙে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তা মুখ্যমন্ত্রী সামলাতে পারবেন তো? এর দায় কিন্তু ওঁকে নিতে হবে। আগুন যদি উনি জ্বালিয়েছেন, সেই আগুনে ওনাকেই পুড়তে হবে।” এদিন বিকেলের দিকে মুচিপাড়া থানায় যান সায়ন্তন বসু এবং বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
আরও পড়ুন- পরকীয়ার জেরে জামাইয়ের হতে খুন শাশুড়ি, চাঞ্চল্য ভাতারে
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “সজল ঘোষ এতদিন তৃণমূলে ছিলেন। ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে এসেছেন। তাঁর ক্লাবও ছিল। আর আজ সেই ক্লাবটাই দুর্নীতির আখড়া হয়ে গেল। আজকে সজল ঘোষ সমাজবিরোধী হয়ে গেলেন!” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “এটা কোনও একটা ইস্যু নিয়ে বিজেপির লোকেদের ওপর অত্যাচার করা, কেস দেওয়া, ভয় দেখানো। ক্লাবে কে ইভটিজিং করেছে, তার জন্য প্রতিষ্ঠিত এক রাজনৈতিক নেতার বাড়ি ভেঙে ঢুকে গ্রেফতার করা হল? আসামি নাকি? কোথায় আইনকানুন আছে? এরা আবার দিল্লি যাচ্ছে গণতন্ত্র খুঁজতে? লজ্জা করা উচিত।”
আরও পড়ুন- পাহাড়ে খবরের শিরোনামে গুরুং, ৪ বছর পর নতুন করে মদন তামাং খুনের ফাইল খুলল সিবিআই
পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কেউ মহিলাদের হাত ধরে টানলে তাকে কি পুলিশ দুধ খাওয়াবে!” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “কাল রাত থেকে বিজেপি অসভ্যতা করেছে। সজল এর মধ্যে ঢুকে অন্যায় করেছে। মানুষের ক্ষোভ থাকবেই। সজলের উচিত ছিল পুলিশকে সহযোগিতা করে বেরিয়ে আসা। তবে অভিযোগের অনুপাতে পুলিশের সময় না দিয়ে দরজা ভাঙার দৃশ্য অবাঞ্ছিত। এতে অভিযুক্তদের সুবিধা হয়।”
ঘটনার সূত্রপাত চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রাতে। ওই দিন ক্লাব ভাঙচুর ঘিরে তুলকালাম হয়ে ওঠে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সংলগ্ন এলাকা। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ক্লাবে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ করে সজল ঘোষ। পালটা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে ওই ক্লাবের সদস্যরা মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করেছে। ইভটিজিং-এ জড়িত সকলে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের অনুগামী।
আরও পড়ুন- বীরভূমে গ্রেফতার ভুয়ো মহিলা আইপিএস অফিসার
এই নিয়ে শুরু হয় বিবাদ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে পালটা দাবি করা হয় যে ক্লাবের সদস্যরা একটি দোকান ভাঙচুর করেছে। সেই কারণেই বিজেপির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘোষ বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। তাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো ওই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে।