কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: আফগানিস্তানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের আবায়া ও নিকাব পরে যেতে হবে। যাতে মুখের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে থাকে।
এছাড়াও তালিবান নির্দেশ দিয়েছে পুরুষ এবং মহিলারা একই ক্লাসরুমে বসে পড়াশোনা করতে পারবে না। আলাদা ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। আলাদা ক্লাসরুম সম্ভব না হলেও অন্তত মহিলা এবং পুরুষদের ক্লাসরুমের মধ্যে একটি পর্দার ব্যবস্থা করতে হবে।
মসনদে বসে একের পর এক বিধিনিষেধ জারি করছে তালিবান। সপ্তাহ খানেক আগেই মেয়েদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দিয়েছিল তালিবান।
তবে, শিক্ষা কতৃর্পক্ষের জারি করা নোটিশে জানানো হয়েছিল, মেয়েদের স্কুলে আর পড়াতে পারবেন না পুরুষ শিক্ষকেরা। শুধুমাত্র মহিলা শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। যদি সেটি সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে বৃদ্ধ শিক্ষক নিয়োগ করা যেতে পারে। যার আচরণ ভাল।
২০০১ সালে তালিবানি শাসন শেষ হয়। সেই সময় মেয়েরা শিক্ষার থেকে অনেক দূরে থাকত কারণ পুরুষ এবং নারী উভয়কেই একই ক্লাসরুমে পড়াশোনা করতে হত। এছাড়াও বাড়ি থেকে মহিলারা বাইরে গেলে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যেতে হত পুরুষ অভিভাবককে।
শনিবার জারি করা নতুন নির্দেশে মহিলাদের বোরখা পড়ার কোনও আদেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু নিকাব পরে মুখ সম্পূর্ণভাবেই ঢেকে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে, মহিলাদের শুধুমাত্র চোখের অংশটুকু দেখা যাবে।
আরও পড়ুন- পঞ্জশিরে ৬০০ বেশি তালিবান খতম, দাবি আফগান প্রতিরোধ বাহিনীর
সম্প্রতি কাবুলের রাস্তায় এবং ক্রমশই কমে আসছিল বোরখা অথবা নিকাব পরা মহিলার সংখ্যা। যদিও ছোট শহরগুলিতে প্রায়শয়ই দেখা যেত। সোমবার থেকে যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবার খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই সময় এমনই এক নির্দেশ দিল তালিবান।
মহিলাদের জন্য মহিলা শিক্ষক নিয়োগ করা ছাড়াও জানানো হয়েছে মহিলাদের ক্লাস পুরুষদের তুলনায় পাঁচ মিনিট আগে শেষ করতে। যাতে বাইরে মহিলা এবং পুরুষ মেলামেশা না করতে পারেন। তালিবান উচ্চশিক্ষা নির্দেশ অনুযায়ী, পুরুষ সহকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে না যাওয়া পর্যন্ত বেরাতে পারবেন না মহিলারা। তাঁদের অন্য ঘরে অপেক্ষা করে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন- পঞ্জশির কার? তালিবান-নর্দ্যান অ্যালায়েন্সের টানাপড়েন চরমে
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যথেষ্ট কঠিন। কারণ মেয়েদের আলাদা করে শিক্ষা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত মহিলা প্রশিক্ষক বা ক্লাসরুম নেই।’ তবে, তিনি বলেছেন, মেয়েদের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দিচ্ছে তালিবানি এটাই সবথেকে বড় ইতিবাচক পদক্ষেপ।
আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার আগে পর্যন্ত মহিলা এবং পুরুষদের একইসঙ্গে পড়াশোনা করান হত। পুরুষ অধ্যাপকেরা ও সেমিনারে যোগ দিতেন। তালিবানরা যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের ভর্তির হার যথেষ্ট বেশি ছিল। যদিও বর্তমানে তালিবান অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে আবারও মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার কমবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।