কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: সুন্দরবনের বাঘের উপদ্রবের ঘটনা জলভাত। কিন্তু এই বার স্ত্রীর উপস্থিত বুদ্ধির জোরে প্রাণে বেঁচে ফিরে আসলেন স্বামী। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে কাঁকড়া ধরতে যাচ্ছিলেন ওই দম্পতি। হটাৎ ‘ও মা বাঘ’। স্বামীর গলার আওয়াজ শুনে পিছন ফিরতেই দেখেন মাত্র চার হাত দূরে ভয়ানক দৃশ্য। স্বামীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাঘ। কোনও কিছু না ভেবেই, প্রাণের মায়া ছেড়ে তিনিও চেপে বসলেন বাঘের পিঠে। গলায় আকুতি, ‘ও মা ওকে বাঁচাও, ওর কেউ নেই।’ শুরু করলেন বাঘের সঙ্গে কুস্তি। খালি হাতে চেপে ধরেছেন বাঘের ঘাড়। কাঁদতে কাঁদতে বনবিবির স্মরণ নিলেন তিনি। ‘মা তুমি ছাড়া ওর কেউ নেই, তুমি ওঁকে বাঁচাও।’ এইভাবে টানা হ্যাচড়া চলল প্রায় আধ ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: তালিবানদের হটাতে আফগানিস্তানে সেনা নামানোর ইঙ্গিত বাইডেনের
একদিকে কাঁদছেন আর একদিকে সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়াই করছেন বাঘের সঙ্গে। নারীর কোমল হাত পেরে উঠছে না নরমাংসের স্বাদ পাওয়া হিংস্র বাঘের সঙ্গে। কোনওভাবেই বাঘ ছাড়ছে না তাঁর শিকার। হঠাৎই বুদ্ধি খেলে যায় মাথায়। তিনি বাঘের কানের ভেতরে দুটো আঙুল ঢুকিয়ে দেন। এরপর গায়ের জোরে মারেন হ্যাঁচকা টান। বাঘ তখন ঘাবড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আর না পেরে লোকটির শরীর থেকে থাবা তুলে নেয় বাঘটি। এরপর এক দৌড়ে বনের মধ্যে মিলিয়ে যায় বাঘটি। আহত স্বামীকে উদ্ধার করে খরস্রোতা নদী দিয়ে দাঁড় বেয়ে একাই ফিরিয়ে নিয়ে আসেন জ্যোৎস্না শী।
আরও পড়ুন: নেতাজির মৃত্যুদিন নিয়ে টুইট বিজেপি সাংসদের, ক্ষুব্ধ বসু পরিবার, টুইট মুছলেন পখরিয়াল
‘ও মা বাঘ’ এই আর্তধ্বনি সুন্দরবনে হামেশাই শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রামের আটপৌরে এক গৃহবধূ যেভাবে বীর বিক্রমে লড়াই করে স্বামীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন তা গায়ে কাঁটা দেওয়ার মত। মনে করিয়ে দেয় চাঁদ সদাগরের কাহিনীকে। সে গল্পে বেহুলা স্বামীকে বাঁচাতে গেছিলেন স্বর্গ পর্যন্ত। আর এই যুগের জ্যোৎস্না রীতিমত বাঘের সঙ্গে কুস্তি লড়ে ফিরিয়ে আনলেন স্বামীকে।