ধূপগুড়ি: এখন পুজো মানেই থিমের দৌড়ে কে এগিয়ে কে পিছিয়ে৷ পাড়ার ছোট মণ্ডপগুলিতেও থিমের ছড়াছড়ি৷ আর মণ্ডপসজ্জায় চাকচিক্য না থাকলে দর্শকই আসবে না৷ কিন্তু ধূপগুড়ি পুর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডের পুজোয় না আছে জৌলুস না আছে আলোর ছটা৷ থিম পুজোর প্রতিযোগিতা থেকে ক্রোশ মাইল দূরে৷ কিন্তু এমন আড়ম্বরহীন ছিমছাম পুজোতেও যে বিশেষত্ব আছে তা আশেপাশের বিগ বাজেটের পুজোতেও অমিল৷
আরও পড়ুন: কলকাতার ‘প্রথম বারোয়ারি’ সিমলা আজও স্বমহিমায়
কী এমন স্পেশালিটি আছে এই পুজোয়? পুজো কমিটির সদস্য সমর্পিতা ভট্টাচার্য বলেন, ‘পুজোর বিশেষত্ব তো কমিটির নামেই আছে৷ সম্প্রীতি দুর্গোৎসব কমিটি৷ এটা হিন্দু-মুসলিম-হরিজন সবার পুজো৷’ ধূপগুড়ির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা কেউ হিন্দু, কেউ মুসলিম, কেউ হরিজন৷ সব ধর্ম ও জাতির মানুষ এখানে মিলেমিশে থাকে৷ তাই হিন্দুর পুজো মানে সেটা মুসলিম ও হরিজনেরও পুজো৷ সমর্পিতাদেবীর কথায়, ‘আমরা সবাই মিলে পুজো করি৷ সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করি৷ কেউ বুঝবে না এটা হিন্দুর পুজো নাকি মুসলিমের পুজো নাকি হরিজনের পুজো৷’
পুজোটা হয় বিধান রোড মসজিদ পাড়া এলাকায়৷ মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল যেখানে প্যান্ডেল তৈরি করে পুজো হচ্ছে তার পাশেই মাজার শরিফ৷ ওই মাজার শরিফের সামনেই ঢাক, কাঁসর ও ঘণ্টা বাজিয়ে চলছে মা দুর্গার আরাধনা৷ গত পাঁচ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে৷ হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিমরাও পুজোয় অংশ নেন৷ স্থানীয় এক মুসলিম মহিলা বসেছিলেন প্যান্ডেলে৷ কলকাতা টিভিকে তিনি বলেন, ‘ওরা পুজো করে৷ আমরা আনন্দ করি৷ সবাই চাঁদা তুলে পুজো করি৷ কিন্তু এবার কেউ চাঁদা দিতে পারিনি৷’
আরও পড়ুন: সপ্তমীর রোদ ঝলমলে সকাল থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়, বৃষ্টির চোখরাঙানি নবমী-দশমী
আসলে অতিমারির সময় পুজো আয়োজনে হিমশিম খেয়েছে ছোট বাজেটের পুজো কমিটিগুলি৷ তাদের স্বস্তি দিতে সরকারের তরফে ৫০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা করা হয়েছে৷ কিন্তু সেই অনুদানের টাকাটাও সম্প্রীতি দুর্গোৎসব কমিটি পায়নি৷ টাকার জন্য পুজো বন্ধ হয়নি৷ কমিটির সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে পুজোর আয়োজন করে৷ তবে সবাই চায় পুজোর আয়োজনটুকু যাতে ভালো হয়৷ তাই কমিটির সদস্যরা সরকারি অনুদান চাইছেন৷ ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন৷