পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক বালি খাদানে অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গতকাল শনিবার থেকে যৌথ অভিযান শুরু করে পুলিশ এবং ভূমি রাজস্ব দফতর। তারই প্রেক্ষিতে রবিবার অবৈধ কাজকর্মে লিপ্ত ২৩ জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ৩৬ টি গাড়ি ও দশটি ওভার লোডেড লরি আটক করে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ২৬টি মামলা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের এনায়েতপুর মণিদহ চাঁদড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল বালি খাদানে অবৈধ বলি উত্তোলন। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে রমরমিয়ে চলছিল বালি পাচার। কিছুদিন আগেই এই ঘটনার অভিযোগ গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। খবর পেয়েই এই অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো, গত ২৫ শে জুন মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে বিষয়টিকে বৈঠক হয় বিধায়ক মন্ত্রীদের সঙ্গে আমলাদের।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, সৌমেন মহাপাত্র, শ্রীকান্ত মাহাতো, শিউলি সাহা সহ জেলার বিভিন্ন বিধায়ক, পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক। বৈঠকে অন্যান্য উন্নয়নমূলক আলোচনার পাশাপাশি বালি খাদান নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। বৈঠক শেষে মানস ভুঁইয়া জানিয়েছিলেন, ‘অবৈধ বালি খাদান গুলিতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সক্রিয় সংযোগের মাধ্যমে এগুলোর বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকবে।’ বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্তের পরেই গতকাল শনিবার সকাল থেকে একাধিক বালি খাদানে অভিযান শুরু হয় পুলিশের।
জেলার পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি জেসিবি, বালি তোলার দুটি মেশিন সহ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩৪ টি বালি বহনকারী গাড়ি। ঝাড়গ্রাম থেকে আগত আরও দশটি ওভারলোড লরি আটক করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালি মজুদ করার অভিযোগ মামলা দায়ের হয়েছে ২৬ টি, পাঁচটি স্থানে স্থায়ী চব্বিশ ঘন্টার নাকা পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। যেখানে সিসিটিভি ও অন্যান্য ক্যামেরার নজরদারি থাকবে।’
পুলিশি পদক্ষেপ ও প্রশাসনিক তৎপরতায় আগামী দিনে এই ঘটনা কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার।