কলকাতা: বিপদের সময়, খারাপ সময়ে স্কুলের বন্ধুর পাশে প্রিয় বন্ধুরা। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি চিঠির ঘটনায় প্রাক্তন মুখ্য সচিবের পাশে দাঁড়ালেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্ররা। হুমকি চিঠির বিরোধিতায়, আলাপনের নিরাপত্তা চেয়ে তাঁরা সই সংগ্রহ করছেন। প্রাক্তন আমলার একেবারে ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু প্রথম এই উদ্যোগ নেন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়াশোনা করতেন তিনি। পরে তা আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
সই সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনীরা। স্কুলের বন্ধুরা আলাপনের হুমকি চিঠির ঘটনায় যে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন তা লিখিত বিবৃতিতে স্পষ্ট। লেখা হয়েছে, প্রিয় বন্ধুর স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। হুমকি চিঠির ঘটনা কড়া ভাষায় নিন্দা করেছেন তাঁরা। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই কোভিড-কালে সামাজিক এবং ব্যক্তিগত ভাবে নানান টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। কয়েক মাস আগেই কোভিড কেড়ে নিয়েছে তাঁর ছোট ভাই অঞ্জনের প্রাণ। তিনিও রামকৃষ্ণ মিশনেরই প্রাক্তন ছাত্র। লিখিত বিবৃতিতে সে কথা জানানো হয়েছে। আলাপন হারিয়েছেন তাঁর মা এবং ভাইপোকে। বন্ধুদের ভাষায় খুবই একটা খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আলাপন। এ সময় তাঁরা স্কুলের বন্ধুর পাশে থাকতে চেয়েছেন। দুঃখ, কষ্টকে ভাগ করে নিতে চেয়েছেন। অতিমারী সত্যিই প্রাক্তন আমলার জীবনকে ভেঙেচুরে দিয়েছে বলে লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন মিশনের প্রাক্তনীরা।
আরও পড়ুন-কলকাতা থেকে আলাপনের সিএটি মামলা কেন দিল্লিতে, প্রশ্ন তুলল হাই কোর্ট
রামকৃষ্ণ মিশনের সমস্ত প্রাক্তনী তো বটেই প্রত্যেককেই আলাপনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। যাতে তাঁদের বন্ধু এই খারাপ সময় পেরিয়ে যেতে পারে। লিখিত বিবৃতিতে মিশনের সহপাঠী এবং প্রাক্তনীদের বক্তব্য, আলাপন একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র এবং পরিশ্রমী দক্ষ পেশাদার। সমাজের জন্য আলাপনের কাজ সবসময়েই তাঁদের সমৃদ্ধ করেছে। এরইমধ্যে প্রায় একশ জন প্রাক্তনী এই আবেদনে সই করেছেন।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ বন্ধু এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের আর এক প্রাক্তনী সাংবাদিক জয়ন্ত ঘোষালের সঙ্গে এব্যাপারে যোগাযোগ করেছিল কলকাতা টিভি ডিজিটাল টিম৷ তাঁর বক্তব্য, ‘আলাপন আমার থেকে এক ক্লাস উঁচুতে পড়ত৷ ও ৭৬ সালের মাধ্যমিকের ব্যাচ৷ আমি ৭৭ সালের ব্যাচ৷ সেই অর্থে আমরা হাফ প্যান্টের বন্ধু৷ আমরা বিভিন্ন সময় একসঙ্গে কাজ করেছি৷ সাংবাদিকতা করেছি একসঙ্গে৷ রাজ্য সরকারের হয়েও কাজ করেছি৷ আমাদের পারিবারিক যোগাযোগও রয়েছে৷ আলাপনের বিষয়ে বলতে পারি, যাঁরা এসমস্ত হুমকি চিঠি দিচ্ছেন তাঁদের শাস্তি চাই৷’ জয়ন্তবাবুও ওই লিখিত বিবৃতিতে সই করেছেন৷