কলকাতা : কলকাতা থেকে সরিয়ে কেন দিল্লিতে সিএটি মামলা ? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট ৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ এই প্রশ্ন তোলে রাজ্যের উচ্চ আদালত ৷ একই সঙ্গে, ‘ক্যাট’-এর চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত খারিজও করে দেয় হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ । বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই আর্জি খারিজ করে । এর অর্থ, এখন এই মামলা শুনবে কলকাতার ক্যাট ।
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ আলাপনবাবুর প্রশ্নের শীলমোহর দেয়, কলকাতা থেকে সরিয়ে কেন দিল্লিতে সিএটি মামলা ? বিচারপতিরা আরও প্রশ্ন করেন, এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় ফাইল যে দিল্লিতেই রয়েছে, তা কী করে জানতেন ক্যাটের চেয়ারম্যান ? প্রশ্নগুলিতে ক্যাট অস্বস্তিতে পড়ে যায় । ক্যাটের পক্ষ থেকে বলা হয়, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো উচ্চ পদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত দিল্লিতেই হওয়া প্রয়োজন । যদিও ক্যাটের যুক্তি ধোপে টেকেনি । ‘ক্যাট’-এর চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত খারিজ করে অবকাশকালীন বেঞ্চ ।
এ দিন আদালত বলে, ক্যাটের কলকাতা বেঞ্চে আবেদন করার যে আধিকার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের রয়েছে, সেই অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে ৷ একই সঙ্গে বেঞ্চ বলে, দিল্লি যে নির্দেশ দিয়েছে তা সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আলাপনবাবুর মৌলিক অধিকারকে খর্ব করার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: দিল্লি সরছে না আলাপনের মামলা, হাই কোর্টের রায়ে স্বস্তিতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব
প্রসঙ্গত, আগাম কোনও নোটিস ছাড়াই মামলাটি এক দিনের মধ্যে দিল্লির প্রধান বেঞ্চে সরিয়ে নিয়ে যায় ক্যাট । এর পরই কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রকের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনাদের কি মনে হয় না যে আপনাদের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মামলাকারীকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে ? আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জরুরি দরকার ছিল, তাই তিনি অবকাশের মধ্যে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । কিন্তু আপনাদের তাড়াহুড়ো করার কি দরকার ছিল ?’’
উত্তরে কর্মিবর্গ মন্ত্রকের আইনজীবী আদালতকে জানান, ‘‘যে কোনও বেঞ্চে মামলা স্থানান্তর করার ক্ষমতা রয়েছে ক্যাট-এর চেয়ারম্যানের । দিল্লিতে আলাপনের সব নথি রয়েছে । তাই হয়তো ওই মামলা সরানো হয়েছে।’’ পাল্টা প্রশ্নে বিচারপতি জানতে চান, ‘‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চের চেয়ারম্যান কী করে জানলেন যে, আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সব নথি দিল্লিতে আছে ?’’
আরও পড়ুন: আলাপনকে প্রাণনাশের হুমকি, জেরা করতে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে গুন্ডা দমন শাখা
চলতি বছর ২৮ মে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি পর্যালোচনা সভায় কলাইকুণ্ডায় ডেকে পাঠানো হয় তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে । যদিও ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর জন্য ব্যস্ত থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সভায় যেতে পারেননি । এর পর ১৬ জুন আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে DoPT ( Deperatment of Personnel & Training ) ।