২০১৬ সালের ইউরো কাপের ফাইনালে পর্তুগাল যখন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফাইনালে উঠেছিল তখন তাদের জয় সম্পর্কে খুব একটা নিশ্চিত ছিল না বেশির ভাগ ফুটবলবোদ্ধা। কিন্তু তাদের সবাইকে অবাক করে প্যারিসের সাঁ দেনি স্টেডিয়ামে অতিরিক্ত সময়ের গোলে পর্তুগাল হারিয়ে দিয়েছিল ফ্রান্সকে। তাও বিরতির অনেক আগেই মাঠ ছেড়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তবু পর্তুগিজদের জয়কে আটকানো যায়নি।
তার পর ২০১৮-র বিশ্ব কাপে পর্তুগাল খুব ভাল না খেললেও গত বছর তারা উয়েফা নেশনস লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবারের ইউরোতে তারা অবশ্য পড়েছে গ্রূপ অব ডেথে। তাদের সঙ্গে আছে ফ্রান্স, জার্মানি এবং হাঙ্গারি। মঙ্গলবার রোনাল্ডোদের ইউরো অভিযান শুরু হচ্ছে হাঙ্গারি ম্যাচ দিয়ে। বুদাপেস্টের ফেরেঙ্ক পুসকাস এরিনায় হাঙ্গারি কতটা লড়তে পারে রোনাল্ডোদের বিরুদ্ধে তাই এখন দেখার। চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়াও রোনাল্ডোকে এবারের ইউরো আরও একটা সম্মান দিতে পারে। পর্তুগিজ অধিনায়কের আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা এখন ১০৪। আর ছটি গোল করলে তিনি ছাপিয়ে যাবেন ইরানের আলি দায়ির সর্বকালের সেরা ১০৯টি গোলের রেকর্ড। ফাইনাল পর্যন্ত পর্তুগাল যদি যায় তাহলে রোনাল্ডো পাবেন সাতটি ম্যাচ। তার মধ্যে ছটি গোল করা অসম্ভব নয়।
পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো স্যান্টোস ৪-২-৩-১ ছকে খেলতে ভালবাসেন। সামনে শুধু রোনাল্ডোকে রেখে তিনি যে তিন অ্যাটাকিং মিডিওকে রাখেন তাঁরা হলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ব্রূনো ফার্নান্ডেজ, লিভারপুলের দিয়েগো জোটা এবং ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বের্নাদো সিলভা। এবারের ই পি এল-এ ব্রূনো চার বার মাসের সেরা ফুটবলার হয়েছেন। ম্যান সিটিকে ই পি এল জেতাবার ব্যাপারে বড় ভূমিকা আছে বের্নাদো সিলভার। আর লিভারপুলের দিয়েগো জোটা খুব বেশি সুযোগ না পেলেও দশটা ম্যাচে সাতটা গোল করেছেন। এদের জন্যই ইউরোর আগে শেষ ম্যাচে ইজরায়েলকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল।
সামনের দিকটা যথেষ্ট ভাল পর্তুগালের। তবে তাদের পিছনের দিকটাও খারাপ নয়। দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার পোর্তোর পেপে এবং ম্যান সিটির রুবেন ডায়াসের বয়স হয়েছে। কিন্তু তাদের খেলায় তার কোনও ছাপ পড়েনি। রাইট ব্যাক জোয়াও কনসেলো করোনার জন্য এবারের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন। তবে তাঁর বদলি নিয়ে তেমন ভাবনা নেই। গোলে রুই প্যাট্রিসিও এখনও আগের মতোই নির্ভরযোগ্য।
হাঙ্গারি নিজেদের মাঠে খেলবে। কিন্তু তারা কখনও পর্তুগালকে হারাতে পারেনি। দু দলের তেরো ম্যাচে নয় বার জিতেছে পর্তুগাল। বাকি চার বার ড্র হয়েছে। তাদের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার ডমিনিক সোবোসলাই চোটের জন্য টুর্নামেন্টে নেই। নেই আরেক তারকা জোসোল্ট কামারও। এতে হাঙ্গারির অসুবিধেই হবে। তারা খেলে ৩-৫-২ ছকে। কিন্তু অধিনায়ক আদাম সাজালরি, আতিয়া সাজালরি এবং পিটার গুলাশিকে নিয়ে হাঙ্গারি লড়াই করার চেষ্টা করবে। কিন্তু তা দিয়ে কি পর্তুগালকে রোখা যাবে? সন্দেহ আছে।