নেদারল্যান্ডস–৩ উত্তর ম্যাসিডোনিয়া–০
অস্ট্রিয়া–১ ইউক্রেন–০
ইতালির মতোই টানা তিনটে ম্যাচ জিতে ইউরো কাপের প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে পৌছে গেল নেদারল্যান্ডস। সোমবার আমস্টারডম এরিনায় তারা পরিষ্কার তিন গোলে হারিয়ে দিল সি গ্রূপের লাস্ট বয় উত্তর ম্যাসিডোনিয়াকে। ফ্রাঙ্ক দি বোরের ছেলেদের ম্যাচে যা প্রাধান্য ছিল তাতে তারা আরও বেশি গোলে জিততে পারত। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম দাবিদার নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাসিডোনিয়া যে বিরাট কোনও প্রতিবন্ধ হয়ে দাঁড়াবে তা ভাবেনি কেউই। ৫৯ শতাংশ বল পজেসন নিজেদের অনুকূলে রেখে নেদারল্যান্ডস যেন একটা প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলল। তাদের দুরন্ত স্ট্রাইকার মেম্ফিস ডিপেই ম্যাচের নায়ক। নিজে তো একটি গোল করলেনই এবং জের্জিনহো উইজরাডামকে জোড়া গোলের ক্ষেত্রেও ডিপের বড় ভূমিকা ছিল। সি গ্রূপের অন্য ম্যাচে বুদাপেস্টে অস্ট্রিয়া ১-০ গোলে হারাল ইউক্রেনকে এবং চলে গেল প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে। একুশ মিনিটে তাদের হয়ে গোলটি করলেন ক্রিস্তফ বৌমগার্টনার।
১৯৮৮-র ইউরো চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস কোনও দিন বিশ্ব কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়নি। বিশ্ব ফুটবলে তারাই একমাত্র দেশ যারা তিন বার ফাইনাল খেলেও বিশ্ব কাপের ট্রফিটাতে হাত ছোয়াঁতে পারেনি। তাদের যে দলটা ২০১০ সালের ফাইনালে খেলেছিল সেই অর্জেন রবেন, ওয়েসলে স্নাইডার, রবিন ফান পার্সিরা অবসর নেওয়ার পর ডাচদের সময়টা ভাল যাচ্ছিল না। কিন্তু আবার তারা গুছিয়ে নিয়েছে। এক ঝাঁক দুর্দান্ত ফুটবলার তুলে এনেছে নেদারল্যান্ডস। এদের মধ্যে নাম করতে হবে বার্সেলোনার মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কি দে জং (বয়স মাত্র ২৪), আয়াখসের ডিফেন্ডার ড্যালে ব্লিন্ড এবং অবশ্যই স্ট্রাইকার মেম্ফিস ডিপের কথা। ইউরোর মধ্যেই ২৭ বছর বয়সী ডিপে ফরাসি লিগের লিয়ঁ থেকে বার্সেলোনায় সই করলেন। কিন্তু তার আগে এদিন তিনি তাঁর গোল স্কোরিং এবিলিটিই শুধু নয়, গোল করানোর ক্ষমতাও দেখালেন যা দেখে তাদের সমর্থকরা তো বটেই বার্সেলোনা কোচ রোনাল্ড কোমানও খুশি হবেন যিনি নিজে ডাচ কিংবদন্তী ফুটবলার। ২৪ মিনিটে ডোনিলের কাছ থেকে বল পেয়ে ডিপের বাঁ পায়ের শট গোলকিপারকে কোনও সুযোগ না দিয়ে গোলে ঢুকে যায়।
বিরতির সময় ওই এক গোলেই এগিয়ে থাকা নেদারল্যান্ডস বিরতির পর খেলা শুরু হতে না হতেই পর পর দুটো গোল করে এগিয়ে গেল। দুটি গোলই মিডফিল্ডার জের্জিনহো উইজরাডামের। ৫১ মিনিটে ডিপের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল করলেন প্যারিস সাঁ জাঁমার জের্জিনহো। এর পর সাত মিনিট যেতে না যেতেই আবার ডিপের পাস এবং এবারে জর্জিনহোর গোলটা কিন্তু ডান পায়ে। নেদারল্যান্ডস গ্রূপ লিগে যে ফর্ম দেখাল তাতে টিমটাকে সমীহ করতেই হবে। এখন দেখার তারা কত দূর যায়। তাদের ডিফেন্স বেশ ভাল। যদিও গ্রূপ লিগে যে সব টিমের বিরুদ্ধে তাদের খেলতে হল তারা যে খুব শক্তিধর বলা যাবে না। এই গ্রূপটাই সবচেয়ে সহজ ছিল। মাঝ মাঠে নেদারল্যান্ডসের সব ধরনের প্লেয়ার আছে। ডিফেন্সিভ ব্লকার যেমন আছে ফ্রাঙ্কি দে জং-এর মতো, তেমনি মালেনের মতো ক্রিয়েটিভ ফুটবলারও আছে। আর সামনে আছে মেম্ফিস ডিপের মতো ভাল মানের স্ট্রাইকার। নেদারল্যান্ডস তাই তৈরি দল।
সি গ্রূপের অন্য ম্যাচে অস্ট্রিয়া ১-০ গোলে হারিয়ে দিল আন্দ্রে শেভচেঙ্কোর ইউক্রেনকে। একুশ মিনিটে ডেভিড আলাবার পাস থেকে গোল করলেন ক্রিস্তোফ বৌমগার্টনার। তিন ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রিয়া হল গ্রূপ রানার্স। এবার প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে তারা খেলবে ইতালির সঙ্গে।