মহারাষ্ট্রের নাসিকের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি ও বসিরহাট। করোনার টিকা নিয়ে গোটা শরীরটাই যেন একটা চুম্বক হয়ে গেছে। নেপাল চক্রবর্তী। বয়স ৫৮ বৎসর। শিলিগুড়ির ভরতনগরের বাসিন্দা । গত ৭ জুন কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন তিনি। এরপর ঘটল এক অবাক করা ঘটনা। শরীরে আটকে যাচ্ছে ধাতব পদার্থ। পেশায় গাড়ি চালক নেপাল চক্রবর্তীর সঙ্গে হওয়া এমন ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় গোটা শিলিগুড়িতে। তিনি জানান, জাতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে তিনি দেখেন করোনার দুটো টিকা নেওয়ার পর এক ব্যাক্তির শরীরে হাতা খুন্তি আটকে যাচ্ছে। ঠিক চুম্বকে আটকে যাওয়ার মতো। কৌতুহলবশত তিনিও নিজের শরীরে তা পরীক্ষা করতে গেলে দেখেন তাঁর শরীরেও পয়সা সহ হাতা-খুন্তি এমনকি মোবাইল পর্যন্ত আটকে যাচ্ছে। মুহূর্তেই তা জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। তিনি জানান, টিকা নেওয়ার পর তাঁর শরীরে কোনোরকম অসুবিধা হয় নি। কিন্তু শরীরে ধাতব পদার্থ আটকে যাওয়ায় হতচকিত হয়ে যান তিনি। ঘটনার কারণ জানতে রবিবার তিনি শিলিগুড়ি হাসপাতালে যান। তবে শিলিগুড়ির বিশিষ্ট চিকিৎসক শঙ্খ সেন সহ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সভাপতি ডক্টর গোপাল দেও জানিয়েছেন কোভিডের টিকা নেওয়ার সঙ্গে শরীর ম্যাগনেটিক হয়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে কী কারণে হচ্ছে সেটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
একই ঘটনা বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে। ৭৪ বছরের শংকর প্রামানিক। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। 8 এপ্রিল হিঙ্গলগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেন তিনি। রবিবার দুপুরে গ্রামের এক মুদিখানায় কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেইসময় কিছু খুচরো পয়সা হঠাৎই তাঁর শরীরে আটকে যায়। এরপর তাঁর শরীরে স্টিলের চামচও আটকে যায়। ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে হিঙ্গলগঞ্জ জুড়ে। শংকরবাবু বক্তব্য, তাঁর শারীরিক কোনও অসুবিধা হচ্ছেনা। তবে তাঁর এই ঘটনাকে টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া বলে মনে হলেও, চিকিৎসকদের সাফ কথা টিকা কখনও মানবশরীরে চুম্বক প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে না।
এর আগে এরকম ঘটনা দেখা গেছে মহারাষ্ট্রে। নাসিকের শিবাজী চকের বাসিন্দা 70 বছরের অরবিন্দ জগন্নাথ সোনারও দাবি করেছিলেন, করোনার দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার পর তাঁর শরীরে চুম্বকের মতো ধাতব পদার্থ আটকে যাচ্ছে। এনিয়ে তাঁর বানানো ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যদিও ঘটনাকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন চিকিৎসকরা।