কলকাতা: কুণাল ঘোষের মান ভাঙল। তাঁর মান ভাঙাতে বিশেষ উদ্যোগ নেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শনিবার দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিদ্রোহী কুণাল। ওই বৈঠকে ব্রাত্যও হাজির ছিলেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে শাসকদলের প্রাক্তন মুখপাত্র এবং প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল বলেন, তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব। প্রথম থেকেই আমার একটাই কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সেনাপতি। তাঁরা আমাকে তৃণমূলে থাকার সুযোগ দিয়েছেন। তবে খোওয়ানো পদ আবার ফিরে পাচ্ছেন কি না, তার কোনও উত্তর সরাসরি দেননি তিনি। তৃণমূল নেতা বলেন, আগামিদিনে সব দেখবেন।
গত সপ্তাহে কলকাতা পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ক্লাবের রক্তদান শিবিরে এক মঞ্চে দেখা যায় কুণাল এবং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী তাপস রায়কে। সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতা বিজেপি প্রার্থী তাপসের প্রশস্তি করেন। তিনি বলেন, উত্তর কলকাতায় এবার যেন ছাপ্পা ভোট না হয়। তাঁর ইঙ্গিত ছিল উত্তর কলকাতার বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। সেদিনই বিকেলে কুণালকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন ডেরেক ও ব্রায়েন। তাতেই বেদম চটে যান কুণাল। তিনি ডেরেককে কুইজ মাস্টার এবং পোস্টমাস্টার বলে কটাক্ষ করেন। সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকারে কুণাল উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপের বিরুদ্ধে নানা বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তাঁর মুখে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও প্রশংসা শোনা যায়। তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে আলোড়ন পড়ে। তবে কুণাল বিতর্কে আজ পর্যন্ত দলনেত্রী মমতা, অভিষেক এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি মুখ খোলেননি। বৃহস্পতিবার কুণাল বলেন, পদে নেই, পথে আছি। আমি তৃণমূলে আছি, থাকার চেষ্টা করব। আমার পদের কোনও মোহ নেই। আমি মার্চ মাসেই দলীয় মুখপাত্র এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়তে চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তারপর আবার আমাকে সরিয়ে দেওয়ার মানে কী।
আরও পড়ুন: কমছে তাপমাত্রা, রবিবার থেকে বৃষ্টি কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে
দলীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকেই শিক্ষামন্ত্রী কুণালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তিনি তাঁকে ডেরেকের সঙ্গে বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে অনুরোধ করেন। কুণাল ডেরেকের সঙ্গে একা বৈঠকে বসতে রাজি হননি। তিনি চান, ব্রাত্যও বৈঠকে থাকুন। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ব্রাত্য এদিন বৈঠকে ছিলেন। সেখানে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা ভাঙতে চাননি কুণাল এবং ব্রাত্য। কুণালকে বেশ হাসিখুশিই দেখা যায়। এমনকী সাংবাদিকদের সামনে তিনি গেয়ে ওঠেন, আহা, কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।