সামশেরগঞ্জ: শিক্ষক (Teacher) স্বামীর (Husband) মৃতদেহের দাবিদার তিন স্ত্রী। সামশেরগঞ্জের (Samshergunje) রতনপুর স্টেশন মোড় এলাকায় হইচই কাণ্ড। শেষমেষ পুলিশের (Police) হস্তক্ষেপে সুরাহা। মৃত শিক্ষকের দেহ কে নিয়ে যাবেন? সামশেরগঞ্জের কোহেতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহ নিয়ে তিন স্ত্রীর এই বাদানুবাদ। দিনভর চলল কথা কাটাকাটি। অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে মিলল সুরাহা। বিহারের মধুবনী জেলার বলরামপুর থানা এলাকায় প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া হল শিক্ষকের মৃতদেহ। মৃত ওই শিক্ষকের নামে রাজিন্দর মাহাত (৫৮)।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের (Bihar) মধুবনি জেলার বলরামপুর থানা এলাকার শিক্ষক রাজিন্দর মাহাত। প্রায় ৩০ বছর ধরে সামশেরগঞ্জের কোহেতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন তিনি। প্রথম পক্ষের স্ত্রী সঙ্গীতা মাহাতর বাড়ি বিহার রাজ্যের মধুবনি জেলার জঞ্জারপুর। তাঁদের এক মেয়ে এবং দুই ছেলেও রয়েছে। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ডলি মাহাতর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুর। তাঁরও এক সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি বছর কয়েক আগে সামশেরগঞ্জ ব্লকেরই ঘোষপাড়ার বন্দনা সাহা নামে আরও একজনকে বিবাহ করেন তিনি। প্রথম দুই স্ত্রীর সঙ্গে না থাকলেও ছোট স্ত্রী বন্দনা সাহা মাহাতকে নিয়েই সামশেরগঞ্জের রতনপুর স্টেশন মোড় এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শিক্ষক রাজেন্দর মাহাত। হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ মারা যান রাজিন্দর মাহাত। তারপরই শুরু হয় সমস্যা।
আরও পড়ুন: মধুচক্রের পর্দা ফাঁস পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের, গ্রেফতার সাত
দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকলেও মৃত্যুর খবর পেয়েই ছুটে আসেন অন্য স্ত্রীরা। সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ছোট স্ত্রীর বচসা বাঁধে। তাকে সবকিছু লিখে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন ছোট স্ত্রী। যদিও ছোট স্ত্রীর সেই দাবি মানতে নারাজ দ্বিতীয় স্ত্রী। খবর পেয়ে রাতেই বিহার থেকে ছুটে আসেন প্রথম পক্ষের স্ত্রীও। মৃত শিক্ষকের প্রকৃত উত্তরাধিকারী কে হবেন? প্রথম, দ্বিতীয় নাকি তৃতীয় স্ত্রী? কে নিয়ে যাবেন তাঁর মৃতদেহ? সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারাই বা কী হবে? সেই নিয়েই কার্যত বচসা শুরু হয়। তিন স্ত্রীর এই বচসা থানা পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে থানার হস্তক্ষেপে মৃত শিক্ষকের মা সহ পরিবারের আবেদনে বিহারের মধুবনী জেলার বলরামপুর থানা এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে বিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় শিক্ষক রাজেন্দর মাহাতর মৃতদেহ। এদিকে শিক্ষকের দেহ নিয়ে তিন স্ত্রীর গন্ডগোলের কথা শুনে কোহেতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ আরও অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা এলাকায় পৌঁছন। ওই শিক্ষকের এখনও এক বছর চাকরির মেয়াদ ছিল। পাশাপাশি তাঁর প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকার কী হবে, পেনশন বা চাকরি কে পাবেন সেই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
আরও খবর দেখুন