কলকাতা: বন্যায় ক্ষতিপূরণের কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগের দু’বছর পরেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেই এফআইআর করলে হবে না, এই কেলেঙ্কারির পিছনে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের সকলের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৭-র বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে ৬ জনের কমিটি গঠিত হয়। ২০১৯-এ সেই কমিটি গ্রাহকদের তালিকা তৈরির পর রাতারাতি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান একটি তালিকা তৈরি করেন। বিডিও তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন, যে কোনও দিন লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে। সে কারণেই প্রধানের ওই তালিকা ধরে ক্ষতিপূরণের টাকা ছেড়ে দেওয়ার জন্যে তাকে উপর থেকে ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী নথি দিয়ে দেখান, হাজার হাজার লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোথায় দু’বার, কোথাও তিনবার-চারবার হাজার হাজার ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অডিটর জেনারেলের অফিস গোটা ঘটনার তদন্ত করে যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে স্পষ্ট, বন্যায় ক্ষতির জন্য ওই ব্লকে সরকারের যাওয়া ১০ কোটি টাকার একটা বড় অংশের কেলেঙ্কারি হয়েছে।
এদিন রাজ্যের বক্তব্য, গত মাসে এফআইআর হয়েছে প্রধানের বিরুদ্ধে। তার আগে তাঁকে শো কজ করা হয়েছে। কোর্টের বক্তব্য, মামলা হওয়ার পর অভিযোগ দায়ের ছাড়া আর কিছুই করেনি রাজ্যে। তাই যারা বিডিওকে তালিকা না দেখেই টাকা দিতে বলেছিলেন, সেই চক্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করা ও গোটা দুর্নীতির অভিযোগে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তা জানতে হবে রাজ্যকে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন ‘ভিখারিরা’, দিলীপের মন্তব্যে বিতর্ক, বিঁধল তৃণমূল
২০১৭ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল মালদহে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। ঘরছাড়া হয়েছিলেন বহু মানুষ। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, বন্যায় যাঁদের বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ৭০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ১৪ হাজার মানুষ সেই টাকা পান। ত্রাণের তালিকায় ব্যাপক গরমিল ছিল, এই অভিযোগ তুলে সম্প্রতি হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।