কলকাতা, ১৮ মে : হাই কোর্টের নির্দেশের পরও তিনি হাজিরা দেননি। বুধবার আদালতে জানাল সিবিআই। পাশাপাশি, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর আবেদন শুনতেই চাইল না কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে বলার নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী। বুধবার দুপুরে মামলাটি ওঠে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু মামলাটি শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করেনি ওই বেঞ্চ। মন্ত্রী পরেশ এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর আবেদন নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস জারি হতে পারে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি-কাণ্ডে মামলাকারীর আইনজীবী। সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিজাম প্যালেসে যাননি পরেশ। উল্টে বুধবার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর সঙ্গে কলকাতায় আসার পর সিবিআই হাজিরায় স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
যোগ্য প্রার্থীকে টপকে শাসকদলের প্রভাবশালী নেতার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী চলে এলেন মেধাতালিকার এক নম্বরে। তিনি পার্সোনালিটি টেস্টেও বসেননি। শাসকদলের সেই প্রভাবশালী নেতা পরেশ অধিকারী এখন আবার শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী। তিনি বাম জমানায় খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে তালিকার এক নম্বরে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন আগে তালিকায় এক নম্বরে থাকা প্রার্থী ববিতা বর্মন।
আদালত সূত্রের খবর, মণি দাস নামে আর একজন প্রার্থীকেও বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়। এদিন আদালত অঙ্কিতাকে এবং মণিকে মামলায় সংযুক্ত করার নির্দেশ দেয়। শুনানি শেষে আদালতের মন্তব্য, এই নিয়োগের পিছনে প্রভাবশালী হাত রয়েছে। না হলে অঙ্কিতার চাকরি হয় না। মন্ত্রীর মেয়ে বলে তাঁকে পার্সোনালিটি টেস্ট দিতে হয়নি। আদালত আরও বলে, মেধাতালিকা যখন প্রকাশ হয় তখন পরেশ অধিকারী মন্ত্রী ছিলেন না। আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রী কন্যার চাকরি হয়েছে। এরপরই আদালত সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। বিচারপতি বলেন, রাজ্য ও কলকাতা পুলিসের উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, তারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে তাই সিবিআই অনুসন্ধান দরকার। অঙ্কিতার চাকরি থাকবে কি না তা ঠিক করবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে এতে যে কেলেঙ্কারি হয়েছে সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: SSC Chairman: শিক্ষায় নিয়োগ বিতর্কের মধ্যেই এসএসসির চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা সিদ্ধার্থ মজুমদারের