কলকাতা: গার্ডেনরিচে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল নয়ে। সোমবার রাত পর্যন্ত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকল ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালায়। তাদের অনুমান, এখনও জনা কয়েক চাপা পড়ে থাকতে পারে ধ্বংসস্তূপের তলায়।
এদিকে এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। পুলিশ ওই নির্মীয়মাণ বাড়ির প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে সকালেই গ্রেফতার করেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক অংশীদার শেরুর নাম পেয়েছে পুলিশ। তাঁর খোঁজ চলছে। তিনি পালিয়ে যেতে পারেন কিংবা চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশের অনুমান। ওয়াসিমের দাবি, শেরু ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছেন।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ২২)
ওয়াসিমকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে বাড়ির কাজ চলছিল। জমির মালিক নাসের আহমেদ প্রোমোটারের কাছে দাবি করেন, টপ ফ্লোরে তাঁর ফ্ল্যাট আগে বানিয়ে দিতে হবে। সেইমতো ওপরতলার ফ্ল্যাট আগে বানানো হচ্ছিল। ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে পাঁচতলা আবাসন তৈরি হচ্ছিল। প্রতি বর্ঘফুটের দাম ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ১৬টি ফ্ল্যাট তৈরির কথা ছিল।
আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, আটক ৭
এদিকে জলা বুজিয়ে কী করে সেখানে ফ্ল্যাট হচ্ছিল, পুরসভা কী করে তার অনুমোদন দিল, প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। মেয়র ফিরহাদ হাকিমও স্বীকার করেন, বেআইনিভাবে তৈরি হচ্ছিল বহুতলটি। তিনি আবার দোষ চাপিয়েছেন বামফ্রন্টের ঘাড়ে। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং সিপিএম সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, এর মধ্যে আবার বামফ্রন্ট এল কোথা থেকে। গত কুড়ি বছর ধরে তো পুরসভা চালাচ্ছে তৃণমূল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, বেআইনি বাড়ি ছিল এটি। সোমবারই ১৫ নম্বর বোরোর তিন ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ করা হয়েছে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতিবাদ করেছে। সংগঠন বলে, পুরকর্তারা সবেতেই ইঞ্জিনিয়ারদের ঘাড়ে দায় ঠেলে। মেয়র বলেন, বাড়িটি উঠল কী করে। শুরুতেই নজর করলে তো এটা হত না। বিরোধীরা অভিযোগ করে, পুরসভায় নৈরাজ্য চলেছে। মেয়র দায় এড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ারদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। এদিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি আহতদের দেখতে হাসপাতালেও গিয়েছিলেন।
আরও খবর দেখুন