মালদহ: কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) রেশ কাটতে না কাটতেই ফের মালদহে (Maldah) এক নাবালিকার (Student) অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। মঙ্গলবার সকালে মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার রামনগর উজিরপুর গ্রামের মাঠের পাশে বছর বারো-তেরোর ওই মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, কালিয়াগঞ্জের মতো কালিয়াচকেও এই নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। কালিয়াচকের এসডিপিও সম্ভব জৈন জানান, মৃতার বাড়ি মালদহ থানার নবাবগঞ্জে। সোমবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল। বাড়ি লোকেরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন। পুলিশ পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এদিন সকালে মাঠে কাজ করার সময় কয়েকজন ওই মেয়েটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। মেয়েটির গলায় এবং মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন। দ্রুত পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, মেয়েটিকে দেখে মনে হয় সে স্থানীয় বাসিন্দা নয়। তাঁদের অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। মাঠে দাঁড়িয়েই তাঁরা এই ঘটনারও সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হন। পড়ে অবশ্য পুলিশ নাবালিকার পরিচয় জানতে পারেন।
আরও পড়ুন: Tapash Saha | মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর হাত আছে, ফের দাবি তাপসের
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা মোড়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মৃতদেহ উদ্ধার হয় পুকুর থেকে। সেও আগের দিন থেকে নিখোঁজ ছিল। এলাকারই একটি ছেলের সঙ্গে ওই মেয়েটির সম্পর্ক ছিল বলে পরিবারের দাবি। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে। বিজেপিও একই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে। ওই ঘটনাকে ঘিরে গত কদিন ধরেই কালিয়াগঞ্জ উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে শুক্রবার এবং শনিবার দফায় দফায় পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ চলে। পুলিশ লাঠি চালায়, টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায়। জনতাও পাল্টা আক্রমণ করে পুলিশকে। তারই মধ্যে নাবালিকার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশন এবং শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের হাতে। মহিলা কমিশন তিন দিনের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে কালিয়াগঞ্জের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলে। একইসঙ্গে ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়েরও নির্দেশ দেওয়া হয়। জাতীয় মহিলা কমিশন এবং শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে পৌঁছন রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরাও। জাতীয় কমিশনের অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ তাদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করেনি। মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জে পরিস্থিতি বেশ থমথম। তার মধ্যেই মালদহের ফের নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে আবহাওয়া গরম হয়ে উঠেছে।