কলকাতা: প্রাথমিক টেটে (Primary TET) নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ফের সিবিআই-ইডি (CBI-ED) যৌথ তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta Highcourt)। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০২০ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত করবে এই দুই সংস্থা। বৃহস্পতিবার এমনটাই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। পাশাপাশি হাইকোর্টের আরও নির্দেশ, নতুন করে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে হবে ওই দুই সংস্থাকে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কীভাবে তাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব একটি বেসরকারি কোম্পানিকে দিয়েছিল, তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে সিবিআই এবং ইডিকে। এর জঁন্যই দরকার হলে তদন্তকারী সংস্থাকে নতুন করে এফআইআর করতে বলেছে আদালত।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করার বরাত পেয়েছিল ওই বেসরকারি সংস্থাটি। এর আগে পর্ষদের একাধিক অফিসার আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জানিয়েছিলেন, পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ওই সংস্থাকে নিয়োগ করেছিলেন। এই সংস্থাকে কনফিডেন্সিয়াল সেকশন বলেও অভিহিত করা হয়েছিল। আদালত এদিন বলে, পর্ষদের তখনকার যে অ্যাডহক কমিটি ছিল, সেইকমিটির সদস্যদেরও ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিবিআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। প্রয়োজন হলে ওই সদস্যদের হেফাজতেও নিতে পারবে সিবিআই। তবে ওই কমিটিতে ৮০ বছরের প্রবীণ এক মহিলা রয়েছেন। তাঁকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: তৃণমূলে আস্থা পার্থর, তৃণমূল নীরবই
এই মামলায় এদিন ইডিকেও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি। বলা হয়েছে সিবিআই এবং ইডি নিজেদের মধ্যে তথ্যের আদান প্রদান করবে। ইডির তদন্ত আদালতের নজরদারিতে হবে না। সিবিআইয়ের সিটই তদন্ত করবে। দুই সংস্থাকেই ২০ এপ্রিলের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যের পুলিশের উপর আমার ভরসা আছে ঠিকই। তবে এখানে সরকারের অধীনে থাকা পর্ষদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ। আবার সেই পর্ষদেরই সভাপতি ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, যিনি এখনও বিধায়ক পদে বহাল রয়েছেন। পুলিশ এবং পর্ষদ উভয়ই রাজ্য প্রশাসনেরই অঙ্গ। তার জন্যই সিবিআই এবং ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশ করে পর্ষদ, সেই প্যানেলে একাধিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে আদালতে দ্বারস্থ হন বহু চাকরিপ্রার্থী। এদিন বিচারপতি বলেন, আমাকে এক সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, গন্ডায় গন্ডায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কেন দেওয়া হয়েছে? আমি বলেছিলাম, গন্ডায় গন্ডায় দুর্নীতি হয়েছে, তাই গন্ডায় গন্ডায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে হয়েছে। আজ আবার দিলাম। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ এপ্রিল।