কলকাতা: বিমান-হেলিকপ্টার ভাড়া দিতে বারণ করে দিয়েছে। এমনকি অভিষেক বিমানে কোথাও গেলে, ওর পাশের পাঁচটা আসন বুক করে গুন্ডা তুলে দেওয়া হচ্ছে। অভিষেকের জীবন বিপন্ন। সেদিন যেভাবে হামলা চালানো হয়েছিল বুলেটপ্রুফ গাড়ি না থাকলে অভিষেকের মাথা গুঁড়িয়ে যেতে পারত। তৃণমূলের যুবনেতা সুদীপ রাহা, জয়া দত্তদের দেখতে এসএসকেএমে গিয়ে এই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় এক ইঞ্চি জমিও বিজেপিকে ছাড়া হবে না, হুঙ্কার অভিষেকের
মমতার অভিযোগ, পুলিশের সামনেই মারা হয়েছে সুদীপ, দেবাংশু, জয়াদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নির্দেশে সবটা করা হয়েছে। ত্রিপুরায় বিজেপি দানবীয় শাসন চালাচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্য, পুলিশের সামনে মারা হয়েছে। ওরাই মারল, আবার ওরাই অ্যারেস্ট করল। জয়া-সুদীপদের ৩৬ ঘণ্টা ধরে ত্রিপুরায় কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। ৩৬ ঘণ্টা ধরে এক গ্লাস পানীয় জলও দেওয়া হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অভিষেক বিমানে কোথাও গেলে, ওর পাশের পাঁচটা আসন বুক করে গুন্ডা তুলে দেওয়া হচ্ছে। অভিষেকের জীবন বিপন্ন।’ ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন অভিষেক। কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য ভোকাল টনিকও দিচ্ছেন। সে কারণেই বিজেপির ‘টার্গেট’ অভিষেক, মমতার আজকের বক্তব্যে অন্তত সেই ইঙ্গিত মিলেছে।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই যে বিজেপি অভিষেকের পিছনে নজর রাখবে। এটা হল কাউকে প্রচারের আলোয় আনার চেষ্টা।’
Democracy in Tripura under @BJP4India rule!
Well done @BjpBiplab for taking the state to new heights. pic.twitter.com/3LoOE28CpW
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) August 2, 2021
ত্রিপুরার ধোলাইয়ের আমবাসায় শনিবার আক্রান্ত হন তৃণমূলের সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত, দেবাংশু সহ তৃণমূলের নেতারা। খোয়াই থানায় নিয়ে যাওয়া হলে প্রতিবাদে তাঁরা রাতভর বিক্ষোভ দেখান। এরপর রবিবার সকালে তাঁদের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ত্রিপুরা পৌঁছন ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ ও দোলা সেন।
আরও পড়ুন: প্রত্যেক মাসেই ত্রিপুরায় আসব, আগরতলায় দাঁড়িয়ে বিপ্লব দেবকে হুঁশিয়ারি অভিষেকের
পরে থানায় হাজির হন অভিষেকও। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে প্রায় ৬ ঘণ্টা থানায় ছিলেন অভিষেক। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তার নথি থানার অফিসারের কাছে দেখতে চান অভিষেক৷ প্রশ্ন করেন, হামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের কেন গ্রেফতার করা হবে না? থানার বাইরে এত লোক কেন? ব্রাত্য বসু, দোলা সেনরাও তর্কাতর্কি শুরু করে দেন৷
রবিবার খোয়াই আদালতে পেশ করা হয় ১১ জনকে৷ কিন্তু মামলা শেষ পর্যন্ত টেকেনি আদালতে৷ ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে দেবাংশু-জয়াদের জামিন মঞ্জুর করে দেন বিচারক৷ তৃণমূল নেতাদের হয়ে সওয়াল করেন ১২ জন আইনজীবী৷ দেবাংশুদের ছাড়াতে কলকাতা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৮ জন আইনজীবীকে৷
আরও পড়ুন: মমতাকে ‘মা’ সম্বোধন, আশ্বাস দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট আক্রান্ত সুদীপের
শুনানি চলাকালীন খোয়াই থানাতেই বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, তৃণমূল নেতাদের জামিন না পাওয়া অবধি থানা ছেড়ে কোথাও যাবেন না৷ তবে আদালতে গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসুরা৷ আক্রান্তদের ছাড়িয়ে নিয়ে রবিবার কলকাতা ফেরেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক।