বীরভূম: প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্যপদ থেকে তিনজনকে বহিষ্কার করল বীরভূম জেলা জাতীয় কংগ্রেস। বীরভূম জেলার প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতিকেও সাসপেন্ড করল দল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) নির্দেশে এই ঘোষণা করলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী তথা বীরভূম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মিল্টন রশিদ (Milton Rashid)। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী মিল্টন রশিদের নাম ঘোষণা হতে বীরভূম জেলা জাতীয় কংগ্রেসে গৃহযুদ্ধর পরিবেশ তৈরি হয়।
শনিবার সিউড়িতে জেলা আইএনটিইউসির কার্যালয়ে ৪০ জন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। কংগ্রেসের (Congress) অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে আসার পর বাম-কংগ্রেসের জোটের মিটিং শেষ করেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসলেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদ সহ অন্যান্য কার্যকরী সভাপতিরা। আর তারপরেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিল্টন রশিদ জানান, মৃণাল বোস (জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি), সঞ্জয় অধিকারী (প্রাক্তন সভাপতি), অপূর্ব চৌধুরী (PCC মেম্বার), রথীন সেন (PCC মেম্বার), সত্যব্রত ভট্টাচার্য (PCC মেম্বার), এঁদেরকে অধীর দা একটু আগে মৌখিকভাবে সাসপেন্ড করে দিয়েছে। শুধুমাত্র আমি দাদার কথা আপনাদের সামনে রিপিট করলাম। এঁদেরকে আজকে সমস্ত পদ থেকে বিতাড়িত করা হল। এঁদেরকে আর কোনও পদ আর থাকল না।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ৩২)
বহিস্কার প্রসঙ্গে রশিদ আরও বলেন, এরা অনেকেই পার্টিটাই করেন না কিন্তু কংগ্রেসের নাম ভাঙিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষতি করার জন্য বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ ধরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যেহেতু দেবাশীষ ধর ২০০৬ সালে বীরভূম জেলায় এই শহরে থাকতেন এবং এখানে পুলিশে কর্মরত অফিসার ছিলেন সেই সূত্রে এখানকার দু’একজন নেতার দেবাশীষ ধরের সঙ্গে হরিহর আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট যখন তৃণমূল এবং বিজেপিকে আটকানোর রাস্তায় প্রায় পৌঁছে গেছে তখন দেবাশীষ ধর প্রার্থী ডিক্লেয়ার হবার পরেই তাদের আচার-আচরণ এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে কংগ্রেসের নাম করে কংগ্রেসকে ক্ষতি করার জন্য কংগ্রেসের মুখোশটা পরে বেড়াচ্ছিল এবং বাম কংগ্রেসের ভোটের কিছুটা পারসেন্ট যেন দেবাশীষ ধরের দিকে যায় তার ব্যবস্থা করছিল।
অন্যদিকে বহিস্কার প্রসঙ্গে মিল্টন রশিদ ও অধীর চৌধুরীকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মৃনাল বোস জানিয়েছেন, অধীর চৌধুরী কেন বহিষ্কার করলেন সেটা তিনিই বলতে পারবেন। কিছু অভিমান ছিল আর তা থাকতেই পারে। অনেক সমস্যা আছে আর তা নিয়ে আমরা অধীর চৌধুরীকে অনেকবার বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেই না। উনি ভাবেন এখানে মিল্টন ছাড়া আর কেউ নেই। অধীর চৌধুরী তো আমাদেরকে বহিষ্কার করতে পারেন না, বহিষ্কার করতে গেলে তা এআইসিসি (All India Congress Committee) করবে। তিনি এমন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যিনি কোনওদিন জেলা কংগ্রেসের কারও সঙ্গে কিছু আলোচনা করেননি। তিনি প্রার্থী ঠিক করুন কিন্তু প্রার্থী ঠিক করার আগে তো একটা আলোচনার দরকার আছে। অধীর চৌধুরী বলুক না বীরভূম জেলার একটা পাড়ায় তিনটে Working President কিভাবে হয়। আমাদের কংগ্রেসের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য থাকলেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নয়।
আরও খবর দেখুন