নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলা শোনা যাবে না। উড়ো ফোনে হুমকি আসতে শুরু করেছে সুপ্রিম কোর্টে। হুমকির লক্ষ্য বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। যদিও উড়োফোন কোনও বিচারপতির কাছে যায়নি। ফোনগুলি যাচ্ছে শীর্ষ আদালতের একাধিক আইনজীবীর কাছে। অভিযোগ, সোমবার একাধিক আইনজীবী উড়োফানে হুমিক পেয়েছেন। বলা হয়েছে, মোদির নিরাপত্তা লঙ্ঘন সংক্রান্ত মামলা শুনতে পারবেন না বিচারপতিরা।
ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি হুমকি দেওয়ার সময় নিজেকে শিখ ফর জাস্টিস (Sikhs for Justice)-এর সদস্য বলে দাবি করেন। বলেন, আমেরিকা থেকে তিনি এই ফোনটি করছেন। ফোনে আরও দাবি করা হয়, শিখ ফর জাস্টিস, SFJ-ই প্রধানমন্ত্রীর কনভয় ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধানমনন্ত্রীর নিরাপত্তা লঙ্ঘন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। তার কিছুক্ষণ আগেই একাধিক আইনজীবীর কাছে পরপর ফোন আসতে থাকে। উড়োফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে SFJ-র সদস্য বলে দাবি করলেও নাম বা পরিচয় গোপন রাখে।
আরও পড়ুন: PM Security Lapse: মোদির নিরাপত্তা গাফিলতির তদন্তে স্বাধীন সুপ্রিম কমিটি গঠন
হুমকি ফোনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের এই মামলাটি শোনা উচিত নয়। কারণ, ১৯৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় দোষীদের শীর্ষ আদালত শাস্তি দিতে পারেনি। সুপ্রিম আইনজীবীরা জানান, তাঁরা যে উড়োফোনটি পেয়েছেন, সেটি আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা। নম্বরটি ব্রিটেনের।
৫ জানুয়ারি পঞ্জাব সফরে গিয়ে কৃষকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হুসেইনওয়ালায় সভা ছিল মোদির। কিন্তু সভাস্থলে পৌঁছনোর আগেই ফিরোজপুর ফ্লাইওভারে আটকে যায় প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে প্রায় ২০ মিনিট আটকে যায় মোদির কনভয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজির সিদ্ধান্তে এর পর হুসেইনওয়ালায় না গিয়ে ভাতিন্দা বিমানবন্দরে ফিরে যায় মোদির কনভয়। সেখানে থেকে দিল্লিতে ফিরে যান প্রধানমন্ত্রী।
ফিরোজপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা গোটা ঘটনার জন্য পঞ্জাব সরকারকে দায়ী করেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতি থাকার অভিযোগ তোলা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও দাবি করে পঞ্জাব সরকারের তরফে নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতি ছিল। যদিও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই নিরাপত্তায় গাফিলতি থাকার অভিযোগ খারিজ করে দেন। বিতর্কের মুখে পঞ্জাব সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করে। কেন্দ্রের তরফেও আলাদা করে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলাটি উঠলে, শীর্ষ আদালত কেন্দ্র ও রাজ্যের তদন্তে স্থগিতাদেশ দেয়। তার পরেও পঞ্জাব সরকারের একাধিক আধিকারিককে শোকজ নোটিশ পাঠায় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই ভূমিকায় স্বভাবতই ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: Haridwar Hate Speeches: হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ নিয়ে মামলার শুনানিতে রাজি সুপ্রিম কোর্ট