দক্ষিণ আফ্রিকা ১১৮-৯ (২০ ওভারে)
অস্ট্রেলিয়া ১২১-৫ (১৯.৪ ওভারে)
টি টোয়েন্টি বিশ্ব কাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে খুব একটা বেগ পেতে হল না অস্ট্রেলিয়াকে। শনিবার আবু ধাবির জয়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিং নেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। কিন্তু তাঁর বোলারদের দাপটে তেম্বা বাভুমার দল কুড়ি ওভারে তোলে মাত্র ১১৮ -৯ রান। ১১৯ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াও শুরুর দিকে বেকায়দায় পড়ে যায়। মাত্র ৩৮ রানের মধ্যে তাদের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান। এর পর স্টিভ স্মিথ (৩৪ বলে ৩৫) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২১ বলে ১৮) টিমকে টেনে তোলেন। দুজনে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৪২ রান। কিন্তু দু জনেই পর পর আউট হয়ে যাওয়ায় অজিরা একটু হলেও সমস্যায় পড়ে। সেখান থেকে তাদের ম্যাচ জিতিয়ে দেন মার্কাস স্টোয়নিস এবং ম্যাথু ওয়েড। স্টোয়নিস ২৪ (১৬ বলে) এবং ওয়েড ১৫ (১০ বলে) অপরাজিত থেকে দুই বল বাকি থাকতেই বিশ্ব কাপের প্রথম ম্যাচে জিতিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। ১৯ রানে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা জশ হ্যাজেলউড।
অজি অধিনায়ক আগেই বলেছিলেন তাঁর দল চার বোলারে খেলবে। পঞ্চম বোলারের কাজটা চালিয়ে দেবে ম্যাক্সওয়েল, স্টোয়নিস কিংবা মিচেল মার্শের মতো কেউ এক জন। সেভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওভারেই বল করতে এলেন ম্যাক্সওয়েল। এবং তাঁর তৃতীয় বলেই বোল্ড করলেন বাভুমাকে। প্রোটিয়া অধিনায়ক করলেন ৭ বলে ১২ রান। একটু পরেই ভান ডান দুসেনকে (২) তুলে নিলেন হ্যাজেলউড। এর পর অপর ওপেনার কুইন্টন ডি কক-ও (১২ বলে ৭) বোল্ড হলেন হ্যাজেলউডের বলে। ২৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে আফ্রিকানরা যখন পায়ের তলায় একটু মাটি খোঁজার চেষ্টা করছে তখনই ফিরে যান হেনরি ক্লাসেন (১৩ বলে ১৩)। প্যাট কামিংসের বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন স্টিভ স্মিথ। এর পর অলরাউন্ডার ডেভিড মিলারকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন আইডেন মার্করাম। দলের রান ৪৬ থেকে টেনে নিয়ে যান ৮০ পর্যন্ত। কিন্তু তখনই আবার পতন। মিলারকে (১৮ বলে ১৬) তুলে নেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। প্রিটোরিয়াসও (১) বেশিক্ষণ টেকেননি। তিনিও জাম্পার শিকার। কোনও রান না করেই রান আউট হয়ে যান কেশব মহারাজ। ৪৬-৪ থেকে হঠাৎই দক্ষিণ আফ্রিকা ৮৩-৭ হয়ে যায়। কিন্তু এক দিকটা ধরে রেখেছিলেন মার্করাম। কিন্তু এর পর তাঁকেও ফিরিয়ে দেন মিচেল স্টার্ক। মার্করামের ৪০ এসেছে ৩৬ বলে যাতে ছিল তিনটি বাউন্ডারির সঙ্গে একটি ওভারবাউন্ডারিও। তিনি ফিরে যাওয়ার পর কাগিসো রাবাডার জন্যই তাঁর দল ১১৮ পর্যন্ত পৌছতে পেরেছে। রাবাডা ২৩ বলে ১৯ করে অপরাজিত থাকেন, যাতে একটি বাউন্ডারির সঙ্গে একটি ওভারবাউন্ডারিও ছিল। অজিদের পাঁচ বোলারই উইকেট পেয়েছেন। মিচেল স্টার্ক (২-৩২), জশ হ্যাজেলউড (২-১৯), প্যাট কামিংস (১-১৭) এবং অ্যাডাম জাম্পার (২-২১) সঙ্গে চার ওভার বল করে সফল ম্যাক্সওয়েলও(১-২৪)।
কুড়ি ওভারে ১১৯ তেমন কিছু টার্গেট নয়। কিন্তু প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার আনরিখ নোখিয়া এবং কাগিসো রাবাডার জন্য সেটা তুলতেই সমস্যায় পড়েন অ্যারন ফিঞ্চরা। অজি অধিনায়ক প্রথম ওভারেই ফিরে যান ডিপ থার্ডম্যানে কাগিসো রাবাডার হাতে ক্যাচ দিয়ে। বোলার ছিলেন নোখিয়া। পাঁচ বল খেলে কোনও রান করতে পারেননি ফিঞ্চ। একটু পরেই ওয়ার্নারকে (১৫ বলে ১৪) তুলে নেন রাবাডা। শর্ট পয়েন্টে তাঁর ক্যাচ ধরেন ক্লাসেন। মিচেল মার্শও (১৬ বলে ১১) বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। এর পর স্টিভ স্মিথ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যাটিং করে এগিয়ে নিয়ে যান দলকে। কিন্তু ৩৪ বলে ৩৫ করার পর স্মিথ নোখিয়ার বলে মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তাঁর ইনিংসে ছিল তিনটি বাউন্ডারি। একটু পরেই ফিরে যান ম্যাক্সওয়েলও। ২১ বলে ১৮ করার পর তাবারাইজ সামসিকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ম্যাক্সওয়েল। এর পর স্টোয়নিস ও উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েড অবিচ্ছিন্ন থেকে জিতিয়ে দেন অজিদের। কুড়িতম ওভারের চতুর্থ বলে প্রেটোরিয়াসকে লং অনে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচের সমাপ্তি ঘটান স্টোয়নিস। প্রিটোরিয়াস ছাড়া বাকি চারজন প্রোটিয়া বোলারই উইকেট পেয়েছেন। নোখিয়া (২-২১), রাবাডা (১-২৮), মহারাজ (১-২৩) এবং সামসি (১-২২) বল হাতে সফল।
এক নম্বর গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আছে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও শ্রী লঙ্কা। খুবই কঠিন গ্রুপ।এই গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল যাওয়া বেশ কঠিন। প্রথম ম্যাচ জিতে অজিরা সেই দৌড়ে একটু এগিয়ে রইল।