Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: চৌকিদার চোর হ্যায়
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১১:৩০:৫৯ পিএম
  • / ৪৮৭ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা৷ মনে আছে? তো এসব বাওয়াল সেই কবেকার। ইদানিং নেহরু ফোবিয়ায় আক্রান্ত, আমাদের পরধান সেবকের মুখে এসব কথা আর শোনা যায় না৷ উনি এখন অন্য গল্প শোনাতে ব্যস্ত। ২০১৪-র নির্বাচনের সময় জনসভায়, প্রত্যেকটা জনসভায় বলে বেড়াচ্ছিলেন, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। ফলাফল কী? জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত ২৭ জন চোর দেশের কোটি কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়েছে৷ যাদের বেশ কয়েকজন পরধান সেবকের পরিচিত৷ তাঁদের তিনি মেহুল ভাই, নীরব ভাই বলেও ডাকেন, প্রকাশ্যেই। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯-এ সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৮-এ৷ আর ঠিক এই মুহূর্তে আমাদের গ্যাঁটের টাকা চুরি করে দেশ ছেড়ে পালানো ব্যবসায়ীর সংখ্যা ৫০, তাদের ৯০ % ভাইব্রান্ট গুজরাটের বাসিন্দা৷ একে কি কাকতালীয় বলা যায়? না কি আরও কোনও রহস্য আছে? কত টাকা মার গেল? মানে আমাদের ব্যাঙ্কের কত টাকা নিয়ে তারা পালালো? এই কি প্রথম হল এমন?

না তাও নয়৷ হিসেব বলছে ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মনমোহন সিংহর প্রধানমন্ত্রীত্বকালে এই ব্যাঙ্ক ফ্রড, ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে খোয়া গিয়েছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা৷ শুনেই চোখ কপালে উঠল তো? সত্যিই তো ২৫ হাজার কোটি টাকা কম নয়৷ কিন্তু তারপর এক ফকির চা-ওয়ালা আমাদের দেশের মাথায় বসলেন৷ ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত এই জালিয়াতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াল, এক লক্ষ বত্রিশ হাজার কোটি টাকায়। ২০১৯ – ২০২১, যখন দেশ করোনা কালে ঢুকে পড়েছে, ব্যবসা বন্ধ, পরিযায়ী শ্রমিকরা মাইলের পর মাইল হাঁটছেন, চাকরি চলে যাচ্ছে, মাইনে ছাঁটাই হচ্ছে, তখন চুরি হল ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা, কেবল চৌকিদার যখন পাহারায়, তখন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পরিমাণ, ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার কোটি টাকা।

কারা নিল? কিভাবে নিল? তারা কোথায়? তাদের ধরার জন্য কী করা হচ্ছে? কত টাকা আদায় করা হল বা কত টাকা আদায় করা যাবে? এ নিয়ে চৌকিদার সংসদে একটা কথাও বলেছেন? না বলেননি, তিনি ফেডারেলিজমের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, অশিক্ষিত, অসত্য ব্যাখ্যা। কিন্তু এটাও হিমবাহের চুড়া মাত্র, টিপ অফ দ্য আইসবার্গ। কারণ চুরি করে পালিয়ে যাওয়া, ব্যাঙ্ক জালিয়াতিই কেবল সমস্যা নয়, সমস্যা আরও গভীরে।

আচ্ছা ব্যাঙ্ক চলে কী ভাবে? আমার আপনার পয়সা ব্যাঙ্কে জমা হয়৷ সেই টাকা ঋণ দেওয়া হয়, তার বিনিময়ে যে সুদ আসে, সেটাই ব্যাঙ্কের রোজগার। ব্যাঙ্ক কাদের ঋণ দেয়? বাড়ি করার জন্য, গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেওয়া হলে মধ্যবিত্তদের তা শোধ দিতেই হয়, শোধ না দিলে বাড়ি বা গাড়ি কেড়ে নেওয়া হয়, গুন্ডা পাঠানো হয়, আরও কত ব্যবস্থা৷ বহু ছোট ব্যবসায়ী, অসংখ্য ছোট কৃষক ঋণ শোধ দিতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন৷ কিন্তু সে সব ছোটদের ব্যাপার। নাম্বারস সাংটিফাই, ছোট ঋণের ক্ষেত্রে ডিফল্টারও কম, আর শোধ দিতে না পারলে যে জমি বা বাড়ি বন্ধক থাকে, তা বিক্রি করে পরিশোধের পরিমাণও বেশি।

কিন্তু বড় ঋণ? ৫০০/১০০০/৫০০০/ লক্ষ কোটি টাকা ঋণই আসলে ব্যাঙ্কের আয়ের মূল সোর্স, আর সেখানেই আসল ঘাপলা, সেখানেই লুঠ চলছে, চৌকিদারের দেখরেখেই চলছে সেই লুঠমার। আসুন সেটাই বোঝার চেষ্টা করি, কি ভাবে, কত পরিমাণ লুঠ চলছে আমাদের দেশে।

একটা কথা ইতিমধ্যে সব্বাই জেনে গিয়েছেন৷ এনপিএ, নন পারফর্মিং অ্যাসেট, আসলে হল শুদ্ধ ভাষায় ঝাপু হয়েছে, মার গিয়েছে, খোয়া গিয়েছে। যে টাকা ব্যাঙ্ক ধার দিয়েছিল, তার এতটা আর কোনও দিন ফেরত আসবে না। আচ্ছা আপনি একটা ৬০ লক্ষ টাকার ঋণ নিলেন ব্যাঙ্ক থেকে, ২০ লক্ষ টাকা ফেরত দিলেন, তারপর বললেন আর পারব না। ব্যাঙ্ক আপনার গাড়ি বা বাড়ি বেচে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে আপনাকে ছেড়ে দেবে? ঋণ ৬০ লক্ষ টাকার হলে হরগিজ ছেড়ে দেবে না, গলায় গামছা দিয়ে আদায় করবে, আপনার বৌএর গয়না, আপনার অন্য ব্যাঙ্কে রাখা টাকা, আপনার বাবার বাড়ি নিয়েও টানাটানি করবে। কিন্তু টাকাটা যদি ১০০০ কোটি হয়? তাহলে ব্যাঙ্ক ৪০০ কোটি টাকা আদায় করে বাকি ৬০০ কোটি ঐ নন পারফর্মিং অ্যাসেটে ঢুকিয়ে দেবে, এটাই রীতি, তার কায়দা কানুন আপনাকে জানতে হবে ব্যস, তাহলেই ঐখানেই গল্পের ইতি, খাতায় লেখা হয়ে যাবে ৬০০ কোটি নন পারফর্মিং অ্যাসেট, কিছুদিন পর তা মুছে ফেলা হবে।

তো আসুন ২০১৪, ৩০ জুন, চৌকিদার যখন থেকে পাহারায় বসলেন, তখন থেকে আজ ওবদি ওই নন পারফর্মিং আসেটের হিসেব করা যাক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় ২০১৪, ৩০ জুনে নন পারফর্মিং অ্যাসেট ছিল ৭৪৪৮২ কোটি টাকা, এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,২০,৮১১ কোটি টাকা। কানারা ব্যাঙ্কে ছিল ১২২৪৭ কোটি টাকা, বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকায়, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের ১২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা, পিএনবি র ৩২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে ৯৮০০০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের মোট এন পি এ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, এখন সেটা ৭৭ হাজার কোটি টাকা,

ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ১১ হাজার কোটি টাকা, এখন হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ১৫ হাজার কোটি টাকা, এখন ৪৬ হাজার কোটি টাকা, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের এনপিএ ছিল ১১ হাজার কোটি টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকায়, মোট এনপিএ ২০১৪ সালে ছিল ২,২৪,৫৪২ কোটি টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৪০,৪৪২ কোটি টাকায়, এসব হিসেব রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।

তো আপনি বলতেই পারেন, সাত বছরে চৌকিদারের আমলে, টাকাটা দ্বিগুণের একটু বেশি বেড়েছে, সে আর এমন কী? আমার আপনার ব্যাঙ্কে রাখা টাকা বাড়ে না, কিন্তু মার যাওয়া টাকা বেড়েছে দ্বিগুণের একটু বেশি, তাই তো? এটাই সত্যি মনে করছেন? এখানেই গল্প শেষ?

না, আসল গল্প এখান থেকেই শুরু, ওই যে আগে বলেছিলাম, নন পারফর্মিং অ্যাসেট, মানে না ফেরত দেওয়া টাকার বিরাট অংশ রাইট অফ করে দেওয়া হয়, যা ফেরত পাওয়াই যাবে না, তাকে খাতায় রেখে লাভ কি, মুছে ফেল? তা কত মুছে ফেলা হল? ২০১৪ সালে মনমোহন সিংহের আমলে মুছে ফেলা হয়েছিল ১৯৮১৫ কোটি টাকা, এরপর থেকে সেই মুছে ফেলার হিসেবটা দেখুন, যখন মিঃ ক্লিন চওকিদার আমাদের সম্পত্তির পাহারায়, ২০১৪ – ২০১৭ সালের মধ্যে এই উবে যাওয়া, মুছে ফেলা, রাইট অফ করে দেওয়া টাকার পরিমাণ ৪,০৩,২১৪ কোটি টাকা, ২০১৭ – ২০২১ এর মধ্যে রাইট অফ করা হয়েছে ৬,৫৯,৬৩৯ কোটি টাকা, কেবল ২০১৮ – ২০১৯ এ রাইট অফ হয়েছে ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা, ১৯ – ২০ তে ২.৩৮ লক্ষ কোটি টাকা, ২০ – ২১ এ ১.৮৫ লক্ষ কোটি টাকা। কি মজার ব্যাপার তাই না?

আমাদের পয়সা নিয়ে, সাধারণ মানুষের পয়সা নিয়ে মোচ্ছব চলছে, এবার পুরো হিসেবটা দেখুন, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি হয়েছে ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার কোটি টাকা, ব্যাঙ্কে অনাদায়ী ঋণ, এন পি এ ৫ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা আর রাইট অফ করা হয়েছে ১০ লক্ষ ৬২ হাজার কোটি টাকা, মোট টাকা মার গেছে ২১ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা, কার আমলে? কে বসেছিলেন পাহারায়? চওকিদার নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি। যিনি এখন নেহেরুকে মুছে ফেলতে চান, দেশের সেই চওকিদারের আমলে লুঠমার চলছে, সেই লুঠমারের শেষ সংযোজন এ বি জে শিপইয়ার্ড কোম্পানি।

২০১৩ সালেই তাদের এন পি এ হবার ঘটনা, দেশের সামনে এসেছিল, তখন পরিমাণ ছিল সামান্য, তারপর থেকে ৮ বছর কেটে গেছে, এখন জানা যাচ্ছে দেশ স্বাধীন হবার পর থেকে সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক ঘোটালাটা হয়ে গেছে, পরিমাণ? ২২,৮৪২ কোটি টাকা। মাথায় কে? আবার একজন গুজরাট নিবাসী ঋষি আগরওয়াল, যাঁর ব্যবসা গুজরাটের সুরাট আর দাহেজ বন্দর জুড়ে, ৫ বছর আগে সি বি আই এই মামলা শুরু করেছিল, আজ তার যবনিকা পতন, চুরি হয়ে গেছে আমাদের টাকা।

এ বি জে শিপইয়ার্ডের গল্পের শুরু ২০০৭ এ, তখন গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী আজকের চৌকিদার নরেন্দ্র মোদি, ১ লক্ষ ২১ হাজার স্কোয়ার মিটার জমি তাদের দেওয়া হয়েছিল, ৭০০ টাকা প্রতি স্কোয়ার মিটার দামে, যখন বাজারের দাম ছিল ১৪০০ কোটি টাকা, ঋষি আগরওয়াল হাজির ছিলেন মোদিজীর ভাইব্রান্ট গুজরাট সামিটে। ২০১৭ তেই জানা গিয়েছিল, তথ্য প্রমাণ হাজির ছিল এই লুঠমারের, ৫ বছর লেগে গ্যালো সত্যিটা জানতে, তত দিনে ২২ হাজার কোটি টাকা লুঠ হয়ে গেছে, ২৮ টা ব্যাঙ্কের টাকা, এমন কি এল আই সিরও টাকা আছে এরমধ্যে, এবং এখনও এই লোকটা জেলে নেই, হয় তো পালাবার তাল করছে, বা কোনও ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসবে, আবার রাইট অফ হয়ে উবে যাবে আমাদের টাকা, আপনার আমার টাকা, আসলে চওকিদার চোর হলে যে সম্পদ রক্ষা করা অসম্ভব তা তো আমরা জানি, কিন্তু এই চওকিদার যে চোর, তা বুঝে উঠতে আর কত সময় নেব আমরা?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
আগামিকাল মুর্শিদাবাদে সেলিমের পরীক্ষা, ১৩ মে বহরমপুরে অধীরের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
শাহের মুখে সন্দেশখালি আছে, নেই ভিডিও নিয়ে কোনও কথা
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
বেহাল সড়ক, প্রশাসনকে জানিয়েও হয়নি লাভ
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team