জঙ্গলমহল: জঙ্গলমহলের একাধিক তৃণমূল নেতা নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে পুলিসের কাছে আবেদন করলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলা পরিষদ সদস্য তথা রানীবাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি চিত্ত মাহাত গত ১৭ এপ্রিল জেলা পুলিস সুপারকে চিঠি দিয়ে নিরাপত্তারক্ষী চেয়েছেন। নিজের একজন নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্বেও তিনি আরও নিরাপত্তারক্ষী চান। ওই ব্লকের আরও পাঁচ তৃণমূল নেতা একইভাবে পুলিস সুপারকে চিঠি লিখে নিরাপত্তারক্ষীর আবেদন জানান।
রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি আবার মাওবাদীরা মাথা চাড়া দিচ্ছে? গত ৮ এপ্রিল মাওবাদীদের ডাকা বনধে জঙ্গলমহলে ভাল সাড়া মেলায় ওই প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল হিসেবে পরিচিত রাইপুর, সারেঙ্গা, বারিকুল, রানীবাঁধ, সিমলাপাল থানা এলাকায়ও ব্যাপক প্রভাব পড়ে বনধের। গত কয়েক মাসে জঙ্গলমহলের বেশকিছু এলাকায় কোনও কোনও তৃণমূল নেতার নাম করে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মাওবাদীদের পোস্টার পড়ে। সেইসব পোস্টারে কাউকে কাউকে মৃত্যুদণ্ডেরও হুমকি দেওয়া হয়। এতেই ভয় পেয়ে গিয়েছেন অনেক তৃণমূল নেতা। সোমবারই পুরুলিয়ার ঝালদায় কিষেণজির নামে পোস্টার উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে। ঝালদা পুরসভা চত্বরে একটি ময়লা ফেলার গাড়িতে কয়েকটি সন্দেহজনক পোস্টার দেখতে পান কর্মীরা। তাতে লাল কালিতে লেখা ছিল, লাল সেলাম। মারোয়ারি চেয়ারম্যান চাই না। কিষেণজি অমর রহে।
আরও পড়ুন: Jadavpur University: যাদবপুরে ছাত্র নেতার আস্ফালন, প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সমিতির
এরই মধ্যে জঙ্গলমহলে বড়সড় মাওবাদী নাশকতার আশঙ্কা করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জঙ্গলমহলের সমস্ত পুলিস কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রাজ্য পুলিসের ডিজি মনোজ মালব্য স্বয়ং জঙ্গলমহলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় পুলিস কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।
এদিকে তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তারক্ষী চাওয়াকে কটাক্ষ করেছেন বাঁকুড়ার বিজেপি নেতারা। দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, বাঁকুড়ার অনেক তৃণমূল নেতার দুর্নীতিক কথা এখন লোকের মুখে মুখে ফিরছে। একাধিক নেতা রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি করেছেন। সেসব দুর্নীতির বিরুদ্ধএ পোস্টারও পড়ছে। এসব কারণেই তৃণমূল নেতারা ভয় পেয়ে নিরাপত্তারক্ষী চাইছেন।
তৃণমূল নেতা চিত্ত মাহাত বলেন, জঙ্গলমহলে নিরাপদে যাতে ঘোরাফেরা করতে পারা যায়, তার জন্যই নিরাপত্তারক্ষী চেয়েছি। তাঁর দাবি, জঙ্গলমহলের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তা সত্বেও ছিটকে পড়া মাওবাদীরা বিজেপির ইন্ধনে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।