লখনউ: উত্তরপ্রদেশে ভোট নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নিশানা করে তোপ দাগলেন অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব রবিবার দাবি করেন, বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথকে টিকিট দিচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশও বিজেপি-র হাতছাড়া হতে চলেছে। মুলায়ম-পুত্রের মন্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রীকেই এবার কেউ টিকিট দিচ্ছেন না। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কী-ই বা হতে পারে!’ আসন্ন নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি ৪০০ আসন পাবে বলেও এদিন দাবি করেন অখিলেশ।
বিধানসভা ভোটে যোগী আদিত্যনাথ টিকিট পাবেন না। এমন একটা খবর অবশ্য গোবলয়ের রাজনৈতিক মহলে বেশ কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের খবর, কেশবপ্রসাদ মৌর্যকে উত্তরপ্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে পারে বিজেপি নেতৃত্ব। যোগীর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে বলেই মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ। গুঞ্জন, রাজ্য বিজেপির একাংশ যোগী আদিত্যনাথকে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন না। এই আপত্তির কথা শীর্ষ নেতৃত্বের কানেও গিয়েছে।
আরও পড়ুন : UP Election: বহুমুখী লড়াই, উত্তরপ্রদেশের ভোট লোকসভার আগে সিংহাসনের সেমিফাইনাল
আবার আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে কোনও ভাবে উত্তরপ্রদেশ হাতছাড়া হোক, এটা চাইবে না বিজেপি নেতৃত্ব। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশ বিজেপির জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু। এমন একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব যোগী আদিত্যনাথকে দাঁড় করানোর ঝুঁকি নেয় কি না, তা সামনের কয়েক দিনের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। যোগী আদিত্যনাথ নিজে বলেছেন, দল যেখানে দাঁড় করাবে, সেখানেই তিনি দাঁড়াবেন। অখিলেশ যাদবও বলছেন, তিনি কোথায় দাঁড়াবেন, দলই তা ঠিক করবে।
৮ জুলাই উত্তরপ্রদেশ সহ ৫ রাজ্যের ভোট নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই অতিমারির আবহে উত্তরপ্রদেশে সাত দফায় নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে কমিশন। প্রথম ভোটগ্রহণ রয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। সপ্তম দফায় ভোট ৭ মার্চ। ১০ মার্চ একসঙ্গে পাঁচ রাজ্যের ফলপ্রকাশ।
অখিলেশ যাদব যে দাবিই করুন না কেন, একাধিক প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষায় কিন্তু দাবি করা হয়, উত্তরপ্রদেশে রাজনৈতিক পালাবদল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অনায়াসে জিতবে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। এই প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষাতেই সামনে আসনে বিজেপির আসন ভাগাভাগিতে কয়েকটি কেন্দ্রে সরাসরি লাভবান হবে সমাজবাদী পার্টি। এদিক, বিজেপির প্রাক্তন জোট শরিক এসবিএসপির সঙ্গে এ বার গাঁটছড়া বেঁধেছে সমাজবাদী পার্টি। সঙ্গে রয়েছে রাষ্ট্রীয় লোকদলও।
আরও পড়ুন : Assembly Elections 2022: কীভাবে প্রচার করবেন ভোট প্রার্থীরা, গাইডলাইন দিল কমিশন
উত্তরপ্রদেশের ভোটকে সামনে রেখে বিজেপি ‘মন্দিরের রাজনীতি’ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেন অখিলেশ যাদব। বিজেপির দাবি তুলে ধরে মুলায়ম-পুত্র বলেন, অযোধ্যা, কাশীর পর মথুরা এ বার বিজেপির নজরে। পঞ্জাবের ফিরোজপুরে নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রসঙ্গও তোলেন অখিলেশ। সমাজবাদী পার্টি প্রধানের কটাক্ষ, ‘প্রধানমন্ত্রীর ওই সভায় যাওয়া উচিত ছিল। তা হলে অন্তত সভাস্থলে খালি চেয়ারগুলো দেখতে পেতেন।’
৫ জানুয়ারি পঞ্জাবের হুসেইনওয়ালায় সভা করতে যাওয়ার পথে ফিরোজপুর উড়ালপুলের উপর প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট আটকে গিয়েছিলেন মোদী। কৃষক বিক্ষোভের জেরে গাড়ি নিয়ে আর এগনোর ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি। তা নিয়েও এখন রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে।