চলতি বছর নভেম্বরেই বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি পদে মেয়াদ শেষ হচ্ছে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। দিলীপের পর কার হাতে রাজ্য বিজেপির ব্যাটন তুলে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কয়েক মাস ধরে জল্পনা চলছে।
শুক্রবার দুপুরে রটে যায়, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে পরবর্তী রাজ্য সভাপতি হিসাবে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের নাম প্রস্তাব করেছেন দিলীপ ঘোষ। যদিও গোটা বিষয়টিকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন মেদিনীপুরের সাংসদ। সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘বাংলার মেয়ে’ মমতার মোকাবিলায় সভাপতি পদে কোনও মহিলা মুখকেই আনতে চলেছে।
আরও পড়ুন: বাবুলের ‘রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া’ নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ
জল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, দেবশ্রী চৌধুরীর নাম। শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপবাবু বলেন, আমি এখনও কয়েকমাস রাজ্য সভাপতি আছি। আমার কাছ থেকে কোনও নাম চাওয়া হয়নি। আমি যখন সভাপতি হয়েছিলাম, তখনও আমার নাম কারও কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। আমাদের নিজস্ব একটা সংবিধান আছে। তা মেনে আমাদের কাজকর্ম হয়।
২০১৫ সালে প্রথমবারের জন্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত হন দিলীপ ঘোষ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বেই ১৮টি আসন পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এই সাফল্যে ভর করে ২০২০-তে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় দ্বিতীয়বারের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। বাংলা জয়ের লক্ষ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ওপরই আস্থা রেখেছিলেন মোদি-শাহ। তবে ম্যাজিক ফিগার দূর, মাত্র ৭৭-এই থামতে হয় বিজেপিকে (BJP)। এর পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে ডামাডোল শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE: দিলীপের চেয়ারে বসবেন কে, রাজ্য বিজেপিতে জোর জল্পনা
মুকুল রায়ের (Mukul Roy) মতো শীর্ষ নেতা দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। দলে থাকলেও সৌমিত্র খাঁ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, চন্দ্র বসু, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা নিয়ম করে বেসুরো গাইছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দিলীপবাবুর সম্পর্কের কথাও সর্বজনবিদিত। নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন হাসিমুখে দু’জনে ছবি তুললেও ভোটের ফল বেরোনের পরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দিলীপের ঠান্ডা লড়াই প্রকাশ্যে এসেছে।
রাজ্য বিজেপির ডামাডোল সামলানোর ভার কার হাতে দেয় গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতারা, সেটাই এখন দেখার। সূত্রের খবর, দিলীপবাবুর জায়গায় দায়িত্ব পেতে পারেন রায়গঞ্জের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। সে কারণেই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার আগে দেবশ্রী ছিলেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক। দেবশ্রী আরএসএসের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত।
আরও পড়ুন: বিজেপি যুব মোর্চায় সৌমিত্রর একনায়কতন্ত্র, সম্মান নেই মহিলাদের, দিলীপ ঘোষকে লিখিত অভিযোগ
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সভাপতির দৌড়ে তিনি বাকিদের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। এখন প্রশ্ন একটাই, দিলীপকে তবে কী দায়িত্ব দেওয়া হবে? গেরুয়া শিবিরে লাখ টাকার প্রশ্ন এখন এটাই।