কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর নেপালে নাইট পার্টিতে যোগ দেওয়ার ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখনই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির আপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার খবর প্রকাশ্যে এল। ফলে শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও বাড়ল। যদিও আপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ অস্বীকার করে মণীশ বলেন, আমি কংগ্রেসে ছিলাম, কংগ্রেসেই আছি, কংগ্রেসেই থাকব। তবে আমাকে কেউ তাড়িয়ে দিলে অন্য কথা।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর কংগ্রেসের যেসব নেতা নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ হলেন মণীশ। গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মা, শশী থারুরদের মতো মণীশও নেতৃত্ব বদলের দাবিতে সোচ্চার হন। জি-২৩ গোষ্ঠীভুক্ত নেতারা অবিলম্বে স্থায়ী কংগ্রেস সভাপতির দাবিও তোলেন। বিক্ষুব্ধদের সেই দাবি নিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী তাঁদের সঙ্গে আলোচনাও করেন। মাসখানেক আগে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া আবেগমথিত গলায় বলেন, আপনারা যদি চান, তাহলে আমি, রাহুল, প্রিয়াঙ্কা পদ ছেড়ে দিতে এখনই রাজি আছি। পরে অবশ্য ওয়ার্কিং কমিটি সোনিয়ার নেতৃত্বেই আস্থার কথা জানিয়ে লিখিত প্রস্তাব গ্রহণ করে। ঠিক হয়, সেপ্টেম্বরে সাংগঠনিক নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সোনিয়াই কংগ্রেসের সভানেত্রী পদে থাকবেন।
এরই মধ্যে মণীশের আম আদমি পার্টির নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে মণীশ চণ্ডীগড় কেন্দ্র থেকে লড়তে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা চলছে। ইতিমধ্যেই মণীশ তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে চণ্ডীগড়ের জন্য প্রচুর টাকা দান করেছেন। চণ্ডীগড়ে দুটি জিম তৈরির জন্য তিনি ১০ লাখ টাকা দিয়েছেন। গত সপ্তাহে চণ্ডীগড়ের রেসিডেন্টাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়শনের এক প্রতিনিধিদল মণীশের সঙ্গে দেখা করেন। মণীশ জানান, তাঁদের কোনও অভাব অভিযোগ থাকলে যেন তাঁকে জানানো হয়। তিনি সবসময় তাঁদের পাশে আছেন। নিজের আনন্দপুর সাহিব কেন্দ্র ছেড়ে কেন চণ্ডীগড়ের প্রতি মণীশের এত মনোযোগ, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি লোকসভা অধিবেশনেও তিনি চণ্ডীগড় নিয়ে একাধিকবার সরব হন।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: খাট ভেঙেছেন শুভেন্দু! কিনে দিলেন সৈকত
গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মণীশ দল ছাড়লে তা কংগ্রেসের পক্ষে বড় ধরনের ক্ষতি হবে। শশী থারুরের মতো তিনিও ইংরাজিতে অত্যন্ত সাবলীল। কথাবার্তাও বলেন বেশ গুছিয়ে। কংগ্রেসের বর্তমান দুরবস্থার মধ্যেই রাজস্থানের তরুণ নেতা শচীন পাইলট এখনও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দর কষাকষি করে চলেছেন। হাই কমান্ড পাইলটের মান ভাঙাতে পারেনি এখনও পর্যন্ত। তবে এরই মধ্যে কংগ্রেসের পক্ষে কিছু ভালো খবরও বাজারে রটেছে। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেসের কয়েকজন প্রবীণ সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে খবর। সামনেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে কংগ্রেসের অন্দরে আরও কত কী ঘটবে, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।