কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: তারস্বরে হর্ন বাজিয়ে ছুটছিল গাড়িটা। ঘড়ির কাঁটা তখন বিকালে ৫টা ছুঁইছুঁই। নিউ দোমহনী ও নিউ ময়নাগুড়ির মাঝে বিকট শব্দ। লাইনচ্যুত হয়েছে আপ বিকানের এক্সপ্রেস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উদ্ধাকারী দল। যায় পুলিস। যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। যায় রেলের শীর্ষ আধিকারিকরা। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্যাস কাটার দিয়ে দরজা-জানালা কাটা শুরু হয়। সেখান থেকে আহত নিহতদের বার করা শুরু হয়। সহায়ক নম্বর চালু করে রেল।
গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। ঠিক কি কারণে দুর্ঘটনা টা নিয়ে কাটাছেঁড়াও শুরু হয়েছে। তাতেই উঠে আসছে বেশ কিছু প্রশ্ন। নিছকই দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা। গাফিলতি কার। চালক কি মুহূর্তের জন্য অন্যমনস্ক হয়েছিলেন। আবহাওয়ার কারণে দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছিল। সিগন্যাল বা পয়েন্টের কোনও সমস্যা ছিল। নাকি পর্যবেক্ষণের অভাব ছিল রেল লাইনে।
প্রাথমিক ভাবে রেল জানাচ্ছে সিগন্যালের কোনও সমস্যা ছিল না। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে দুর্ঘটনার কারণ লাইনের ত্রুটি। রেল লাইনে হয়ত কোনও সমস্যা ছিল। যদিও এই বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলেনি রেল। কেবলই অনুমানের কথা বলেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সামনে আসার পরেই সব কিছু স্পষ্ট হবে। তবে, আজকের দুর্ঘটনা বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিল।
আরও পড়ুন- Bikaner Express accident: রক্ত মাখা হাতটা দেখেই ছুটলেন উদ্ধারকারীরা
প্রথমত, করোনা-লকডাউনের কারণে গত দু’বছর ধরে রেল পরিষেবা অনিয়মিত। একাধিক ক্ষেত্রে রেল লাইনের রক্ষনাবেক্ষণ কেমন হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। লকডাউনের সময় ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ হয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
দ্বিতীয়ত, করোনার কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অনেক রেলকর্মী রয়েছে। কর্মীর অভাব তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে রেল পরিষেবায়।
তৃতীয়ত, আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনাকেও অনেকে সামনে আনছেন। একদিকে শীতের ফলে তাপমাত্রার বাড়া কমা। অন্যদিকে কুয়াশা। লাইনে দৃশ্যমানতার সমস্যা হতে পারে বলেও অনেকের মত।
চতুর্থত, বিকানের এক্সপ্রেসে চালকের কোনও সমস্যা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়েছিলেন কি না। বা তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা হয়েছিল কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল।