শ্রেয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা
কলকাতা: গোটা দেশ রঙের ছোঁয়ায় রঙিন হয়ে উঠেছে। কিন্ত সমস্ত রঙের মাঝে রঙহীন হয়ে থাকে এদেশের বিধবারা। বসন্ত দরজায় নেড়ে ছিল কড়া। কিন্ত ভাগ্যের পরিহাসে আজ তাদের জীবনে নেই ফাগুনের ছোঁয়া। সমাজের মূল স্রোত থেকে দূরে। বৃন্দাবন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বহু হিন্দু বিধবা মহিলার আশ্রয়স্থল। উৎসববিমুখ জীবনের সব আনন্দ সখ ভালোলাগাকে বিসর্জন দিয়ে পড়ে আছে সাদা থানর পড়ে দিনের পর দিন রয়েছেন বিন্দাবনের কোনও আশ্রমে। কিন্ত এই দোলের বিশেষ দিনে আমার আপনার মত রঙ খেলায় মেতে ওঠে। শুনে আপনার মনে প্রশ্ন জেগেছে সাদা থান পড়া মেয়েমানুষগুলো আবার রঙ খেলছে। রঙের ছোঁয়া তাদের জীবনে নিষিদ্ধ। কিন্তু হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও বৃন্দাবনের বিধবারা যাদের জীবনের সমস্ত রঙ সাদা থান দিয়ে ঢাকা তারা আজকের দিনে লাল-নীল-গোলাপি-হলুদ রঙে নিজেদের রাঙিয়ে তোলে।
শুভ অনুষ্ঠানে বিধবাদের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা। নানা বিধিনিষেধ রয়েছে বিধবাদের ওপর। বিধবা হলেই যেন সামাজিক অবস্থান দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ভগবানের ধামে নরক যন্ত্রণা তাঁদের ভোগ করতে হয়। কোনও আশ্রম, বা হোমগুলিতে খাবারও ঠিকঠাক জটে না বলে অভিযোগ। রোগভোগে মেলে না ওষুধ। অনেকে আবার যৌন নির্যাতনের শিকার হন। তবুও প্রতিবছর, হোলি বৃন্দাবনের বিধবাদের (Vridavan Holi Celebrit Widows) কঠোর জীবনে কিছু রঙ নিয়ে আসে। এই একটা দিন জীবনের পাওয়া না পাওয়াকে সরিয়ে রেখে রঙের উৎসব নিজেদের গা ভাসিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: লাল ঝড় জেএনইউতে, ছাত্র সংসদের ভোটে ভরাডুবি এভিবিপির, জয়ী বাংলার ছেলে
আজ হাজার হাজার বিধবা বৃন্দাবনে (Vridavan Widows ) বাস করেন। তাঁদের অধিকাংশই আবার বাংলার। দোলের এই বিশেষ দিনে সমস্ত বেড়জাল পেরিয়ে বৃন্দাবনে গোপীনাথ মন্দিরে রঙের খেলায় মাতোয়ারা হন বিধবারা। বৃন্দাবনের সবথেকে পুরনো মন্দির গোপীনাথ মন্দির। এখানে আশ্রিতা সবাই গোপী। শ্রীকৃষ্ণের স্মরণ করে মনের সমস্ত অন্ধকারকে সরিয়ে তাঁরাও হোলির আনন্দে মেতে ওঠেন। বৃন্দাবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে এটি কিন্তু একটি। এই বিশেষদিনে একে অপরের মুখে আবির ছিটিয়ে দেন। আবার অনেকে এই দিনে রঙের সঙ্গে জল মিশিয়ে সবার গায়ে ছিটিয়ে মেতে উঠেন আনন্দে। ভক্তিমূলক গান ও ভজনেরও আয়োজন করা হয়।
অন্য খবর দেখুন