নয়াদিল্লি: পেগাসাস কাণ্ড নিয়ে উত্তাল হয়ে রয়েছে সংসদ ভবন। দুই কক্ষেই গত চার দিন ধরে এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিরোধীরা। দীর্ঘ সময়ের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছিল। লোকসভার অধিবেশন বন্ধ থাকলেও রাজ্যসভায় চালু হয়। বৃহস্পতিবার সেখানেই ঘটে গিয়েছে বড় অঘটন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ কেড়ে নিয়ে তা ছিঁড়ে ফেলে দিলেন তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন।
আরও পড়ুন- জাতীয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে এজেন্সি পাঠিয়ে মুখবন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি : মমতা
খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়। বিজেপি সাংসদেরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এই ঘটনার। সমাজবাদী পার্টির এক সাংসদ সদস্যের মুখেও এই ঘটনার নিন্দা শোনা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- পেগাসাস খুব বড় কেলেঙ্কারি, সংবাদমাধ্যমের মুখও বন্ধ রাখতে চাইছে কেন্দ্র : মমতা
ঘটনার সূত্রপাত সংসদে পেগাসাস বিতর্ক নিয়ে। সংসদের উচ্চকক্ষে এই নিয়ে আলোচনার সময়ে বাদানুবাদে জড়িয়ে যান তৃণমূল সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হারদীপ সিং পুরি। সেই সময়ে অপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের হাতে পেগাসাস কেলেঙ্কারি সম্পর্কিত কাগজ ছিল। সেই পেগাসাস রিপোর্টের কাগজ মন্ত্রীর হাত থেকে কেড়ে নেন সাংসদ শান্তনু। শুধু তাই নয়, কেড়ে নিয়েই সেই কাগজ ছিঁড়ে ফেলে দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার ওই সাংসদ।
আরও পড়ুন- নতুন আইটি নীতিকে চ্যালেঞ্জের মামলায় কেন্দ্রের জবাব চাইল দিল্লি হাইকোর্ট
এরপরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সাংসদের উচ্চকক্ষের পরিস্থিতি। পরে মার্শালদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ মহেশ পোদ্দার। তাঁর কথায়, “যারা বাংলায় মানুষ খুন করে এবং মহিলাদের উপরে নির্যাতন করে, তারা অনেক কিছুই করতে পারে। তীব্র নিন্দা জানিয়েও বলছি যে আমি এই ঘটনায় একটুও অবাক হইনি।” বিজেপির বাঙালি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, “যে কোনও বিষয় নিয়ে বিতর্ক করা যেতে পারে। এটা তো গুণ্ডামি করা হল।”
বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদের কীর্তির নিন্দা করেছেন সমাজবাদী পার্টির সদস্য রাম গোপাল যাদব। তিনি বলেছেন, “ঘটনার সময়ে আমি সংসদে উপস্থিত ছিলাম না। পরে সম্পূর্ণ্টা শুনেছি। এই ধরকার কাজকে কখনই সমর্থন করা যায় না। কাগজ ছিনিয়ে নেওয়া বা ছিঁড়ে দেওয়া অনুচিত।”
আরও পড়ুন- টিভি দেখতে গিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণ করলেন প্রতিবেশী
সংসদের বাইরে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তৃণমূলের অপর সাংসদ শুখেন্দু শেখর রায়কে। যদিও তিনি কোনও উত্তর না দিয়ে সমগ্র বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। গাড়ি এলে উঠে যান শুখেন্দুবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের অপর সাংসদ দোলা সেন। তিনিও কোনও মন্তব্য করেননি। যা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন কটাক্ষ করে বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী তো গত সাত বছর ধরে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলছেন না।”
Mr @ANI
The Prime Minister has not answered A SINGLE QUESTION from the media 7 years. Why are you getting touchy🤪 https://t.co/h8imul4U99
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) July 22, 2021
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সমগ্র ঘটনা ব্যাখ্যা করেন তৃণমুলের সাংসদেরা। সেই সময়ে ডাঃ শান্তনু সেন বলেন, “অধিবেশনের শেষে আমায় ডেকেছিলেন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। আমি গেলে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় হুমকি দেওয়া শুরু হয়। শারীরিক হেনস্থার চেষ্টাও হয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।” অন্যদিকে, সূত্রের খবর তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনতে চলেছে বিজেপি।