ওয়েবডেস্ক- মহারাষ্টের (Maharastra) তরুণী চিকিৎসককে (Female Doctor) ধর্ষণ, আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক। সাব ইন্সপেক্টর (এস আই) গোপাল বাদানে-কে (Police Sub-Inspector Gopal Badane,) হেফাজতে নেয় পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ফাল্টন গ্রামীণ থানায় আত্মসমর্পণ করেন সাব ইন্সপেক্টর গোপান বাদানে। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হেফাজতে নেওয়া হয়। এই ধর্ষণ কাণ্ডে এই বরখাস্ত হয়েছে এসআই মূল অভিযুক্ত। ৩৬ ঘণ্টা আত্মগোপন করেছিলেন। তার শেষ লোকেশন সোলাপুরের পান্ধারপুর শনাক্ত করা হয়েছিল। আজ তাকে আদালতে পেশ করা হবে। সাতারা পুলিশ (Satara Police) এই অপর মামলার অপর অভিযুক্ত টেকি প্রশান্ত বাঙ্কার (Prashant Banker) শনিবার ভোরে গ্রেফতার করে। প্রশান্ত আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে থাকবে।
গোপাল বাদানে যখন ফালতান থানায় রাতের ডিউটিতে ছিলেন, তখন চিকিৎসকের ধর্ষণ ও আত্মহত্যার ঘটনাটি সামনে আসে। তীব্র জনরোষের মুখে বাদানে পালিয়ে গিয়ে ৩৬ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল। অভিযোগ, পুলিশই বাদানেকে নিরাপদ জায়গায় থাকতে সাহায্য করেছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে সাতারা জেলার পুলিশ দুটি টিম গঠন করে। এদের মধ্যে একটি দল প্রশান্ত বাঙ্কারকে তার বন্ধুর ফার্ম হাউস থেকে গ্রেফতার করে।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্টের পাহালতান জেলার ২৬ বছরের ওই তরুণী চিকিৎসক নিজের হাতে কবজিতে সাত লাইনের একটি সুই সাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেন। ওই পত্রে তরুণী চিকিৎসক লেখেন, সাব ইন্সপেক্টর গোপাল বানাডে তাঁকে একাধিক বার ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন করেছে। পাশাপাশি তার বাড়িওলার ছেলের প্রশান্ত বাঙ্কারও তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করেছে। বিগত চার মাস ধরে তার উপর মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে দুজন। তদন্ত কমিটির সামনে তার আগের জবানবন্দিতে তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে তাকে মেডিকেল রিপোর্ট পরিবর্তন করতে এবং জাল ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন- নিজেকে ‘বিহারের নায়ক’ বলে প্রচার শুরু তেজস্বীর, কটাক্ষ BJP-র
বাঙ্কারের পরিবারের সদস্যরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন যে তাদের ছেলে নির্দোষ এবং এই মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তারা বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে তদন্ত হলে আসল ঘটনা সামনে আসবে।
সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপালা বানাডে তাঁকে চার বার ধর্ষণ করেছে। এতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, পুলিশ অফিসারের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার পাশাপাশি, একজন এমপি এবং তার সহযোগী সহ শক্তিশালী ব্যক্তিরা তাকে অভিযুক্তের জন্য জাল মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট জারি করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তিনি মেনে না নিলে হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস বলেছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এক জন চিকিৎসককে এইভাবে চলে যেতে হল, এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। সরকার দোষীদের রেয়াত করবে না। সব দোষীদের শাস্তি হবে। বিরোধীদের কাছে ফড়ণবীসের অনুরোধ, এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। তাদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আম্বাদস দানভে, শিবসেনা (ইউবিটি) এমএলসি এবং বিরোধী দলনেতা বলেছেন, এক তরুণী চিকিৎসক বার বার তার উপর নিওর্যাতনের অভিযোগের পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থার কারণে মহিলা ডাক্তারকে এই ভাবে চলে যেতে হল। স্থানীয় লোকসভার সাংসদ এবং বিজেপি বিধায়কও এই মহিলা ডাক্তারকে হয়রানি করছেন। চিকিৎসকের কল রেকর্ড সামনে আনা হোক। মহারাষ্ট্র সরকার লাডলি বহেনা নিয়ে ব্যস্ত, সেই রাজ্যেই মহিলাদের সুরক্ষার দিকে তাদের কোনও কোনও খেয়াল নেই।
দেখুন আরও খবর-