নয়াদিল্লি: দিল্লিতে নির্যাতিতা শিশুর পরিবারের ছবি টুইটারে পোস্ট করে বিতর্কের মুখে পড়েন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী । টুইটারে তাঁর করা পোস্ট ও ছবির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র। পকসো আইনে মামলা দায়ের হয় রাহুলের বিরুদ্ধে। জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের নির্দেশে তাঁর টুইটার হ্যান্ডেল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় টুইটার কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় রাহুল গান্ধীর সোশ্যাল প্লাটফর্ম ইউটিউবে ক্ষোভ উগড়ে দেন টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, টুইটার একটি সামাজিক মাধ্যম হয়ে দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে তিনি লেখেন, “সংসদে বক্তব্য রাখা যায় না। সংবাদ মাধ্যম সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাই টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নিয়েছিলাম প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচার চাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানেও নিয়ন্ত্রণ করা হল। ডিজিটাল দাদাগিরি নেহি চালেগি”।
আরও পড়ুন: রাহুলের নেতৃত্বে বিরোধীদের কেন্দ্র বিরোধী মিছিল সংসদের বাইরে
দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। তিনি বলেন, তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে প্রায় ৮০ থেকে নব্বই কোটি ফলোয়ার রয়েছে। এত মানুষের কণ্ঠস্বর রোধ করতে চাইছে সরকার। এভাবে টুইটার নিজের নিরপেক্ষতা নষ্ট করছে। বানিজ্যিক বিনিয়োগকারীদের জন্য যা ক্ষতিকারক। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, এভাবে দেশের গণতন্ত্র প্রতি মুহুর্তে আক্রান্ত হয়ে চলেছে। সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণ করছে কেন্দ্র। তাই সামাজিক মাধ্যমেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচার মাধ্যম করে তুলতে চেয়েছিলাম। সেখানে টুইটারের আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রমাণ হল।
আরও পড়ুন : POCSO আইনে রাহুলের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা, চাওয়া হল জবাব
তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন, কোম্পানিগুলিকে কী শুধুমাত্র সরকারের পক্ষপাতিত্ব করা ও রাজনৈতিক বিষয়ে পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার ভিত্তিতেই বিনিয়োগ করতে দেওয়া হচ্ছে? এরপর রাহুল গান্ধী তাঁর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে একটি পোস্ট করে লেখেন, “…..যদি ধর্ষিতার ন্যায় বিচার চেয়ে লড়াই করা অপরাধ হয় তবে আমি অপরাধী। সরকার একটি সমাজিক মাধ্যমে আমার প্রোফাইল লক করতে পারে কিন্তু দেশের জনগণের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না। ন্যায় বিচার, সহানুভূতি এবং ভালবাসার বার্তা সর্বজনীন, মানুষ নীরব থাকবে না…. সত্যমেব জয়তে”।
https://www.instagram.com/p/CSeRH9-hmur/?utm_source=ig_web_copy_link
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কটাক্ষের জবাবে টুইটার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারা প্রটোকল মেনে রাহুল গান্ধীর টুইটার হ্যান্ডেল লক করেছে। সামাজিক মাধ্যমে করা কোনও টুইটার হ্যান্ডেলে ব্যবহারকারীর কোনও পোস্টের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অভিযোগ থাকলে, টুইটার কর্তৃপক্ষ তাঁকে পোস্টটি ডিলিট করার জন্য একটি নোটিশ পাঠায়।
আরও পড়ুন:রাহুলের পর আরও ৫ কংগ্রেস শীর্ষ নেতার Twitter অ্যাকাউন্ট লক, প্রতিবাদ কংগ্রেসের
এরপর যতক্ষণ না ব্যবহারকারী তাঁর পোস্ট ডিলিট করছেন ততক্ষণ সাময়িকভাবে তাঁর টুইটার হ্যান্ডেল সাসপেন্ড করা হয়। বৃহস্পতিবার মোট ৩০ জন কংগ্রেস নেতামন্ত্রীর টুইটার হ্যান্ডেল সাসপেন্ড করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টও। ঘটনা সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সহ অন্যন্য বিরোধী নেতারাও। প্রতিবাদে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে রাহুল গান্ধীর ছবি প্রোফাইল পিকচার করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে রাহুল লিখেছিলেন, ‘মা-বাবার কান্না শুধু একটা কথাই বলছে – তাঁদের মেয়ে, দেশের মেয়ে ন্যায়বিচারের অধিকারী। আর বিচারের সেই পথে আমি তাঁদের সঙ্গে আছি।’ কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, পরিবারের অনুমতি নিয়েই ছবি দেওয়া হয়েছিল।