কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: লাদাখের যে বিস্তীর্ণ সবুজ ঘাস এক সময় পশমিনা ভেড়াদের চারণভূমি ছিল এখন তা চীনের লাল ফৌজের দখলে। ২০২০ সালের ১৫ জুন রাতে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় এবং চীনের সেনাবাহিনীর যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় তারপর থেকেই লাদাখের ওই অঞ্চলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এই সংঘর্ষে ২০ জনেরও বেশি ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। তবে তাতে চীনের আরও অনেক বেশি সেনা মারা গিয়েছিল। তখন থেকেই একদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী, অন্যদিকে চীনের লাল ফৌজ সদা পাহারায় ব্যস্ত।
২০২০ সাল থেকেই লাদাখের চুশুল, ডেমচোক, চুমুর প্রভৃতি এলাকায় সাধারণ মানুষের বিচরণ দেখা যায় না। অথচ দুবছর আগেও এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পশমিনা ভেড়ার পাল নিয়ে ঘুরে বেড়াত চ্যাংপা উপজাতির যাযাবররা। এই যাযাবররাই তৈরি করে পশমিনা উল। লাদাখ ও সন্নিহিত অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের একমাত্র উপার্জনের উৎস হল এই পশমিনা উল। ওই এলাকার প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে চ্যাংপারা তাদের পেশা চালু রেখেছিল। বরফের মধ্যেও তারা নিয়মিত চারণভূমিতে ভেড়া চড়াতে নিয়ে যেত। এর জন্য তাদের কঠোর পরিশ্রমও করতে হত। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে যদিও বা লড়াই করা যায়, কিন্তু চীনা বাহিনীর রক্তচক্ষু এড়িয়ে ওই এলাকায় যাওয়া অসম্ভব। এই কারণেই ভেড়া চড়ানো বন্ধই হয়ে গিয়েছে। খাদ্যের অভাবে ভেড়াগুলি হয় মারা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Ramkrishna Mission: দেশের সেরা দশে বেলুড় বিদ্যামন্দির
এই কারণেই এখন পশমিনা উলের সংকট দেখা দিয়েছে। এর আগে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন পশমিনা উলের সাপলাই চেন অক্ষুন্ন রাখার জন্য এই অঞ্চলকে পশমিনা এলাকা বলে চিহ্নিত করেছিল। সরকার ঘোষণা করেছিল শীতকালে এবং বর্ষার শুরুতে শুকনো ঘাসের জন্য তারা নিজেরাই অর্থ বরাদ্দ করবে। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর আলাদা হয়ে যাওয়ার পরেই প্রশাসনিক স্তরে কিছু অদলবদলও হয়েছে। লাদাখ নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, প্রতিবছর লাদাখে প্রায় ৫০ টন পশমি উল তৈরি হয়। তার সিংহ ভাগই আসে চ্যাংথাং থেকে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পশমিনা উলের উৎপাদন ধাক্কা খেয়েছে।
আরও পড়ুন: Dalai Lama: দলাই লামার তিব্বত সফরে চাপে চীন, উচ্ছ্বাসে ভাসল লেহ্-লাদাখ
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এইসব এলাকায় যেভাবে চীনের আগ্রাসী মনোভাব বেড়েছে তাতে আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। ভেড়া চড়ানো মাথায় উঠেছে। এখন জীবনধারণই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।